banglanewspaper

প্রচন্ড মানসিক চাপ নিয়ে আজ আর চুপ থাকা যাচ্ছেনা। আমি ব্যাক্তিগতভাবে চারিদিকে যা দেখছি তাতে এত বছরের নির্ভিক সংকিত করছে আমাকেও।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং দেশের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এর দায়িত্বে থাকা আমার অত্যন্ত শ্রোদ্ধাভাজন মহামান্যের প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান রেখেই আজ বলছি আমরা আসলে কোথায় নিরাপদ? সেই সাথে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রকৃত সকল দেশ প্রেমী বাহিনী প্রধাণদের প্রতিও আমার শ্রোদ্ধা অব্যাহত রয়েছে এবং থাকবে।

তবে সচেতন নাগরিক হিসেবে সকল সাধারণ মানুষের পক্ষ থেকে কিছু প্রশ্ন রাখছি যা আপনাদেরকে জানাতে এবং তার সাথে আমাদের সহকর্মীদের সচেতন করতেই এ লেখা।

 

কিছুদিন আগেই শুনলাম পুলিশ বিভাগ ২০ জন সাইবার এক্সপার্ট নিয়োজিত করা হয়েছে। সকল প্রকার অসৎ এবং সাইবার ক্রিমিনালদের মনিটরিং করার জন্য কিন্তু কোথায় তারা! তাদের মনিটরিং এ কি ধরা পরছেনা প্রতি মুহুর্তে নামে বেনামে বিভিন্ন ফেক আইডি খুলে, এবং নিয়ত্রণহীন ভাবে বিভিন্ন নামে ফেসবুকে নিউজ পোর্টাল খুলে, সেখান থেকে ইচ্ছে মত যা খুশি তাই লিখে সরকারের ভাব মুর্তিকে নষ্ট করার জন্য এক ধরণের অনলাইন নিউজের সম্পাদকগণ সেই নোংরা দালালীর মহাউৎসবে মেতে উঠেছে!

বর্তমান সরকার প্রধানমন্ত্রী আজ অবধি দেশের এবং দেশের মানুষের জন্য নিজের জীবনের পরোয়া না করে দিন রাত কাজ করে যাচ্ছেন। কারণ তিনি জনগণের সর্বোচ্চ আশার শেষ আশ্রয় স্থান। তাই জনগণের সন্তুষ্টির জন্য তার নিজের সুখ স্বাচ্ছন্দ্য ভুলে কাজ করে চলছেন অবিরত।

কিন্তু অন্য দিকে এসব কি হচ্ছে! গত ৪৫ বছর পর যে পাপিষ্ঠদেরকে ফাঁসিতে ঝুলানো হয়েছে, কিন্তু সেই পাপীদের ঔরসজাত বংশধররা তো আজো বহাল তবিয়তেই ঘুড়ে বেড়াচ্ছে। এত বছরে তারাও তো নিজেদের দল ভারি করে নানা ভাবে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। শীর্ষ ৫ কুলাংগারের ফাঁসির পর তাদের সন্তানরা একত্রিত হয়ে প্রকাশ্যে নিজেদের ফেসবুক স্টাটাসে জোড়ালো আন্দলের হুমকী দিচ্ছে।

তাদের সাথে তাদের ৪৫ বছরের ঘাপটি মেরে থাকা কত লাখ অনুসারী এত বছরে জন্ম নিয়েছে তার সঠিক হিসেব বোধ করি কারো কাছেই স্পষ্ট নয়। এবং সব থেকে ভয়ের ব্যাপার হলো জাতি এখনো নিশ্চিত নয় যে তারা সরকারের কোন সেক্টরে ঘাপটি মেরে বসে নেই। বা সরকারের ভেতরে বসেই সেই রাজাকার বাহিনীর অনুরাসারী হয়ে প্রতিনিয়ত কাজ করছে না !

এ প্রসংগে আমি আরো একটু স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। যে আমলে নিজামীর গাড়িতে ন্যাশনাল ফ্লাগ লাগানো ছিল, আর আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম প্রাণ পুরুষ তোফায়েল আহমেদ, সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত সাহেব দের মত মহান যোদ্ধারা তাকিয়ে চোখের জল ফেলেছিলেন। সেই কয়েক বছরে কত জন বিসিএস কর্মকর্তা, সরকারী অনান্য বিভাগেও কত শত বা হাজার লোক নিয়োগ হয়েছিল সেটার হিসেব কে রেখেছেন? অথবা পুলিশ বাহিনীতে কনস্টাবল সহ অন্যান্য পদে মোট কত হাজার লোক নিয়োগ দেয়া হয়েছিল ?

অবাক হচ্ছেন এগুলা আপনার বিচক্ষণ মস্তিক কে জিজ্ঞাসা করুণ উত্তর পেয়ে যাবেন আশা করি। এবং সে সময়কার ক্ষুদ্র পদে নিয়োগ পাওয়া চাড়া গাছ গুলো এত বছরে যে মহিরুহ হয়ে যায়নি তার গ্যারান্টি কি আপনি দিতে পারবেন নাকি আমি পারবো। সেটা পারা সম্ভবও নয়।

বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী আমাদের অহংকারের সম্পদ তাই তাদের সবাই কে কোন দিন ই আমি নোংরাদের কাতারে দাড় কারাচ্ছিনা। বরং অসীম শ্রোদ্ধা জানাই সেই সব বীর সন্তানদের যারা দিনরাত ২৪ ঘন্টা আমারদের জান মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। তবে সত্যি টা হল জামাতের বীজ বোনা চাড়া গাছ গুলোও যে খুব সন্তপনে ভাল এবং সত্যিকারের দেশ প্রেমিক পুলিশ বাহিনীর মধ্যে ঘাপটি মেরে নেই সেটাও আমি মানতে পারছি না। অন্তত বিগত কিছু দিনের ঘটনার পরে তো নয় ই।

আরো বিশদ ভাবে বলার আগে আমার পারিবারিক ছোট্ট একটা ঘটনা বলতে চাই। যদি ও এটা একান্তই আমার পার্সোনাল ব্যাপার তবু আজ বলতেই হচ্ছে। গত রোজার ঈদের ১৫ দিন আগের ঘটনা এটা। আমার সন্তানের বাবা অত্যন্ত নিরিহ আর শান্ত স্বভাবের মানুষ বলে এলাকায় তার একটা সুনাম আছে। সেই সাথে তার বাবা ছিলের আর্মীর অবসর প্রাপ্ত সি এম এইচ এর ডক্টর, তার আরো একটা পরিচয় হল তিনি স্বসস্ত্র মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন এবং সেই আমলেই তাকে মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফাই করেছিল বঙ্গবন্ধু নিজেই। তাহলেই বুঝুন সেই বাবার জন্ম দেয়া সন্তান যখন আমার সন্তানের পিতা। তবে সেই মানুষটির আর যাই হোক দেশের এবং সমাজের কোন নোংরা কাজ করতে পারবে না, আই মিন তার রক্তই তাকে করতে দিবে না। তারপর ঘরে যখন আছি আমার মত কেউ তাহলে তো প্রশ্নই আসে না তাইনা?

কিন্তু না গত বছর ১৫: রোজার রাতে হঠাৎ করে আমার কন্যার বাবা উধাও, বাসা থেকে বলে বেড়িয়েছিল কাফরুলে তার বোনার বাসায় যাচ্ছে। অথচ জীবনে সে খুব প্রয়োজন না হলে বাসার বাইরে রাত কাটায়না আর গেলেও তখন আমার কন্যা এবং আমার পার্মিশন নিয়েই যায়। যা বলছিলাম, রোজার রাত ১১-১২-১-২-৩-৪-৫-৬ ঘন্টার পর ঘন্টা পার হচ্ছিল আমি হেনো জায়গা বাদ রাখিনি ফোন দিয়ে, বিভিন্ন থানা, হাসপাতাল, ক্লিনিক, তার বাবার বাসা সহ সর্বত্র খুজে ভোর ৭ টায় গিয়েছিলাম মোহাম্মদপুর থানায় মিসিং ডায়েরী লিখাতে। সংগত কারণেই থানার ওসি সাহেব আমার কথা শুনে মর্নিক ওয়াক ছেড়েই চলে এসে বিভিন্ন থানায় ফোন দিতে দিতে যখন হয়রান ঠিক তখন মিরপুর ১৪ নম্বরের কাফরুল থানায় আমার কন্যার বাবাকে সারা রাত ধরে আটকে রেখে তাকে সন্ত্রাসী মামলায় ফাসানোর হুমকী দিচ্ছিলো। আর শারিরিক অত্যাচার করেছিল আর মোটা অংকের টাকা দিয়ে সেটা মিট করার কথা বলেছিল, ওই থানা পুলিশের তথাকথিত দুই সোর্স, গায় হাত তুলেছিল ও সে সোর্স নাম ধারী চাদাবাজ রাই। কিন্তু আমি যখন এটা শুনলাম সাথে সাথে ওই এরিয়ার পুলিশের ডিসিকে ফোনে জানাতে চেয়েছি তখন জেনেছি তিনি ছুটিতে ছিলেন। ডিসির ফোন না পেয়ে, আমার বন্ধু জাতীয় সংসদের ডেপুটি সার্জেন্ট আর্মস এ এস পি সেলিম'কে জানালাম। মূলত আমি লজ্জা পাচ্ছিলাম এটা জেনে যে ওকে রাস্তায় বাইক থামিয়ে ধরে ওর গায়ে ফেন্সিডিল ছিটিয়ে দিয়েছিল ওই কাফরুল থানার সোর্সরা, (আরেকটা কথা জানিয়ে রাখি সোর্স নামধারীগুলো কিন্তু সরকারী বাহিনীর রিক্রুট করা কেউ নয়। এরা হল কিছু অসৎ পুলিশের প্রতিদিনান্তে নিরিহ মানুষকে সন্ত্রাসী হিসেবে চালান দেওয়ার ভয় দেখিয়ে সম্মামী মানুষের টাকা ছিন্তাই করা দল। যাদের ছিন্তাই করা টাকার ভাগ বাটোয়ারা হয় দিন শেষে সংস্লিষ্ট থানাতেই আর সেই সুবাধে এরাও নিজেদের আইনের লোক বলে পরিচয় দেয়) যাতে ওকে নেশাখোর আর ড্রাগ ব্যবসায়ী আর সন্ত্রাসী প্রমাণে সুবিধা হয়। আর এটা বলতেই আমি সাই ফিল করেছিলাম। তবু আমি এস এস পি সেলিম কে বললাম ঘটনা তারপর বন্ধু সেলিম আমায় জানালো মিরপুর রেঞ্জের দায়িত্বে আছেন এডিসি মাসুদ সাহেব। উনি খুবই ভদ্র মানুষ এটা আমি শত ভাগ নিশ্চিত। যখন তিনি আমার কথা ওভার টেলিফোনেই শুনলেন সাথে সাথে আমায় বললেন "ম্যাম আপনি নিশ্চিত থাকুন এখনি আমি কাফরুল থানায় যাচ্ছি। আর ব্যাবস্থা নিচ্ছি।

পরে এডিসি মাসুদ সাহেবের কথায় আর কিছু না পেরে ছেড়া দিতে বাধ্য হয়েছিল। কিন্তু আমি থেমে না থেকে "টট আইনে" মামলার জন্য সব ডাক্তারি প্রেস্ক্রিপসন রেডি করে কেইস ফাইল করব ঠিক তেমন সময় আমার বন্ধু এডিসি এবং এ এসপির অনুরোধে শুধু সতর্কতার নির্দেশ দিয়ে থেমে গেছিলাম। কারণ পাছে আমার বন্ধু দু' জনের নাম ও জড়িয়ে যাচ্ছিল বলেই আমি তাদের সম্মান রক্ষায় থেমে গিয়েছিলাম। পরে অবশ্য ওই থানার সেকেন্ড অফিসার সহ অনেকেই আমার সামনে আমার সাহস না পেয়ে ক্ষমা চেয়েছিল ফোনেই।

এই কাহিনী আমার নিজের লাইফের তাই আজ যে বিষয় টা অধিক গুরুত্ব দিচ্ছি সেটা উপস্থাপনের জন্যই এত বাড়তি প্রমান টানতে হলো। এবং সেটা অবশ্যই আওয়ামী রাজনীতির সুতিকাগার বাংলাদেশ ছাত্রলীগের উপর এহেন ষড়যন্ত্রকারী মহলের বিরুদ্ধে ঠিক তেমনি অত্যাচার হতে দেখে আবারো আমি মুখ খলছি।

আপনারা কি ভুলে গেছেন আমারদের বঙ্গবন্ধু সে আমলে ক্লাস সিক্স থেকেই ছাত্র রাজনীতির সাথে জড়িয়ে থেকে আমৃত্যু সংগ্রাম করে এই সোনার বাংলা এনে দিয়েছিল। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজেও এই ছাত্র রাজনীতি করেছিলেন, আরো কি জানেন না যে তোফায়েল আহমেদ, সহ বাংলাদের প্রকৃত আওয়ামীলীগ এর সব সিনিয়র নেতারা সবাই ছিলেন ছাত্র রাজনীতিত মূল খুটি। নাকি জানেন না যে মহামান্য স্ব্যয়ং এই ই প্লাটফর্ম থেকে আজ রাষ্ট্রপতির মসনদে অধিষ্টিত। এবং তাদের আত্মা এখনো পরে আছে তাদের সেই ছাত্রলীগের সংগঠনের মধ্যেই।

তবে কোন সাহসে এবং কারা! যখন শেখ হাসিনা সরকার এক এক করে সব যুদ্ধাপরাধীদের কবরে পাঠাচ্ছেন আর নানা দিকের চাপের মধ্যে আছেন। ঠিক সেই সুযোগে প্রশাসনের মধ্যে জামাতী আমলের বীজ গুলো এখব মাথা চারা দিয়ে সারা দেশের সেই সব ছাত্রলীগের নেতাদের বিভিন্ন মামলায় জড়িয়ে ছাত্রলীগ আর আওয়ামীলীগ এর মধ্যে নোংরা চাল খেলে দুই সংগঠনের ফাটল ধরানোর চেষ্টায় মরিয়া হয়ে উঠেছেন এত সাহস আপনাদের এলো কোত্থেকে ?

কি ভাবছেন এসব বঙ্গবব্ধুর যোগ্য কন্যা কিছুই বুঝেননা ? আর তিনি মিডিয়ার স্বাধীনতা দেওয়ার তার অসৎ ব্যাবহার করতেই থাকবেন এবং তিনি চেয়ে চেয়ে দেখবেন? যিনি তার প্রাণের ছাত্রলীগ কে এভাবে ক্ষেপিয়ে পুরো আওয়ামী সরকার কে বিপদে ফেলার নতুন ষড়যন্ত্রের জন্য পেছনে গুটি কারা গুটি চাল দিচ্ছে ।

আর কিছু সময় দিন মাননীয় প্রধানমত্রী কেবল মাত্র শীর্ষ রাজাকার মুক্ত দেশ আপনার/আমার/আমাদের হাতে তুলে দিয়েছেন। আর জানেনই তো, তিনি ও তার বাবার কন্যা কথা যদি মুখে একবার উচ্চারণ করেন সেটা পুরণ তিনি করবেন ই। তবে একটু ধৈর্য্য ধরতেই হবে। কারণ ফেসবুক ওয়ালের রাজনীতিতে অনেকেই ক্ষোভে দুঃখে অনেক কথা লিখা যত সহজ আর দেশের মধ্যেই রাজাকার এবং তাদের জোটে শরিক দল নিয়েও এত বড় বড় উন্নয়ন সহ অহর্নিশি শত্রুদের মাঝে ঘিরে থেকে রাষ্ট্র পরিচালনা তত সহজ নয়।

 

তাই ছাত্রলীগের সকল ভাইদের প্রতি অনুরোধ আপ্নারা চোখ কান খোলা রাখুন সেই সাথে আওয়ামীলীগ এর কাউকে নিয়েই কোন রকম উস্কানী মুলক মন্তব্য করে আওয়ামীনীগ এর সিনিয়ার নেতাদের গালি না দিয়ে বরং প্রসাশনে ঢুকে থাকা জামাত শিবিরের গুপ্ত জানোয়ারদের প্রাক্তন ইতিহাসের প্রমান গুলো শুধু প্রকাশ করুন। আর আপনারা নিজেরা নিজেদের সিনিয়ারদের যত গালি দিবেন সেই কুচক্রি রাজাকারের বংশধররা আবার সেই সুযোগ নিবেই এটা ১০০% নিশ্চিত থাকুন।

ওদের বাবাদের অপকর্মের বিচারের শোধ তারা আওয়ামীলীগ এবং ছাত্রলীগের মধ্যে বিরোধ বাধিয়েই দিবেই এটা এখন ওদের মেইন টার্গেট। আর মনে রাখবেন ছাত্রলীগ কোন কালেই এতিম নয়, তবে আপনাদের এতিম বানানোর গুটি চালা শুরু হয়ে গেছে। তাই আবারো বলছি খুব সাবধানে বিষয় গুলো মেনে চলবেন।

সবাই ভালো থাকুন সব সনয়। রনি সহ সবাই ধৈর্য ধরে সঠিক সময়ের জন্য পেক্ষা করুন। বঙ্গবন্ধু যেমন জীবেনের অর্ধের এর বেশী সময় জেল হাজতে পার করেও দেশের স্বধীনতা এনেছিলেন। আপনারা তো তার আদর্শের সৈনিক তাই বলছি উতলা হবেন না জয় আপনাদের হবেই ইনশাআল্লাহ্‌ ।।

 

 

লেখিকা

 

 

মাকসুদা সুলতানা ঐক্য

ট্যাগ:

সাক্ষাৎকার
আজ ফের মিন্নির জামিন শুনানি

banglanewspaper

বহুল আলোচিত বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় নিহতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির জামিন শুনানি আজ। বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এ জামিন শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

গত ২২ জুলাই বরগুনার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রথমবার মিন্নির জামিনের আবেদন করেন তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. মাহবুবুল বারী আসলাম।

পরে ওইদিনই শুনানি শেষে আদালতের বিচারক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজী তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।

এরপর গত ২৩ জুলাই মিস কেস দাখিল করে বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আসাদুজ্জামানের আদালতে ফের জামিনের আবেদন করেন মিন্নির আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. মাহবুবুল বারী আসলাম। পরে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নথি তলব করে ৩০ জুলাই (মঙ্গলবার) এ জামিন শুনানির দিন ধার্য করেন আদালত।

এ বিষয়ে আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. মাহবুবুল বারী আসলাম বলেন, মিন্নির জামিন শুনানির সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। জামিন শুনানির সময় তার সঙ্গে বরগুনার বেশ কয়েকজন আইনজীবীসহ আইন ও সালিশ কেন্দ্রের আইনজীবী এবং ব্লাস্টের আইনজীবীরাও উপস্থিত থাকবেন।

এ জামিন শুনানিতে মিন্নির পক্ষে অংশ নিতে ইতোমধ্যে আইন ও সালিস কেন্দ্রের দুই আইনজীবী অ্যাডভোকেট নীনা গোষ্মামী ও অ্যাডভোকেট আবদুর রশীদসহ ব্লাস্টের আইনজীবীরাও বরগুনায় এসে পৌঁছেছেন বলে জানা গেছে।

ট্যাগ:

সাক্ষাৎকার
‘সংখ্যালঘুরা’ আর উপহাসের পাত্র হয় না: নির্মল রোজারিও

banglanewspaper

মিথুন মন্ডল: জাতীয় নির্বাচনে সংখ্যালঘুদের ভোট একটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। নির্বাচনকে সামনে রেখে তারা চায় ভোটাধিকারের মাধ্যমে একটি ভালো দল নিয়ে সরকার গঠিত হোক। তাই নির্বাচন কমিশনারকে অনুরোধ করেছেন, নির্বাচনের আগে এবং পরে সংখ্যালঘুদের যেন নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়।

নির্বাচনের ভাবনা নিয়ে বিডিনিউজআওয়ারের সাথে কথা বলেছেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টিয়ান ঐক্য পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও খ্রিষ্টান এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিও।

বিডিনিউজআওয়ার: আগামী ডিসেম্বরে যেহেতু নির্বাচন, এই নির্বাচন কে আপনি কিভাবে দেখছেন?

নির্মল রোজারিও: ‘জাতীয় নির্বাচন সবার জন্য প্রত্যাশিত, সবাই চাই একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন। আমাদের প্রত্যাশা একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও পক্ষপাতহীন জাতীয় নির্বাচন।  সেটা সকল দলের অংশগ্রহনের মধ্য দিয়ে হলে তো বেশি ভালো। নির্বাচন একটি দেশের পট পরিবর্তনের একমাত্র মাধ্যম।’

‘২০১৪ সালের নির্বাচনে সকল দল অংশগ্রহন করেনি। তখনকার বিরোধী দল জ্বালাও পোড়া করেছিল। আমরা সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এমন বিশৃঙ্খলা পরিবেশ আর দেখতে চাই না। আমরা চাই সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচন। সংখ্যালঘুরা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে চাই। আমরা তো অভিবাসী না, এই দেশে আমাদের, এই দেশে আমাদের জন্ম, এ দেশের জন্য আমরা মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীন করেছি।’

‘বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনে আমাদের ভোট দেয়ার নাগরিক অধিকার রয়েছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে এলে ভয়ে-আতঙ্কে ভুগতে থাকে। তারা নিজেদের সংখ্যালঘু সমাজের দুর্বল অংশ মনে করে। এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম কিছু ভাবে এই সমাজের সামান্য সংখ্যক ধনী ও বিত্তবানরা।’

বিডিনিউজআওয়ার: নির্বাচনে সংখ্যালঘুদের ভোট বিশেষ ভূমিকা পালন করে। সে দিকটি আপনি কিভাবে দেখছেন?

নির্মল রোজারিও: ‘আমার ভোট আমি দিব, যাকে খুশি তাকে দেব- এটাই তো গণতন্ত্রের রীতিনীতি। যাদের অধীনেই নির্বাচন হোক- সুষ্ঠু-আদর্শ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পুরো দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। স্বাধীন, নিরপেক্ষ, শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন যে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেশবাসীর প্রত্যাশা পূরণ করতে পারে, তার প্রমাণ ইতিপূর্বে দেখা গেছে। একাধিক নির্বাচনে।’

‘আগে দেখেছি হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষেরা ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারত না। ২০০৮ সালের পর থেকে এ ধরনের ঘটনা আমাদের আর দেখতে হয়নি। আমরা চাই ভোটাধিকারের মাধ্যমে একটি ভালো দল নিয়ে সরকার গঠিত হোক। সাধারণত দেখেছি নির্বাচন মানেই নির্যাতন। পূর্বের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি নির্বাচন আগে বা পরে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন করা হয়। তাই আমরা নির্বাচন কমিশনের প্রধানকে অনুরোধ করেছি যেন নির্বাচনে আগে এবং পরে সংখ্যালঘুদের যেন নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়।’

‘এ নিয়ে আমরা কিছু দিনের ভেতর তাঁর সাথে মিটিং করেছি। এই নির্বাচনে ৭ দফা দাবি দিয়েছি। আমাদের আহ্বান, যাতে গণতন্ত্রী ও অসাম্প্রদায়িক দলগুলো থেকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনো সম্প্রদায়বাদী ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেওয়া না হয়। এ দাবি অত্যন্ত যুক্তিসঙ্গত এবং তা শুদ্ধ জাতীয়তাবাদী ও মানবতাবাদী চেতনার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। তাই মনোনয়নে এ রাজনৈতিক আদর্শের যেন প্রতিফলন ঘটে- এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।’ 

বিডিনিউজআওয়ার: বর্তমান সরকার আমলে সংখ্যালঘুদের উপর হামলা হয়েছে, এটাকে কিভাবে নিয়েছেন?

নির্মল রোজারিও: ‘বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার নির্যাতনে নির্বাচন ইস্যু একটি অন্যতম বিষয়। ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারাদেশে ব্যাপক ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড সংঘটিত হয়। এ সময় পেট্রোল বোমার ব্যবহার ছিল অন্যতম একটি আতঙ্কিত বিষয়। বাংলাদেশ আঞ্চলিক ব্যাপ্টিষ্ট চার্চ রংপুরের পালক প্রধানের নামে হত্যার হুমকি সংবলিত চিঠি ছাড়াও মোবাইল ফোনে বাংলাদেশ ইন্টারচার্চ পাস্টরস এন্ড লিডারস ফেলোশিপের খুলনা বিভাগের নির্বাহী সচিব এবং চার্চ অব গড এর বাংলাদেশ প্রধানসহ খুলনা বিভাগ ক্যাথলিক চার্চের বিশপকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। শুধু ডিসেম্বরে বড়দিন উদাযাপনের পূর্বে দুইজন খ্রিষ্টান ধর্মযাজকসহ সারাদেশে ৩৭জন খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীকে হত্যার হুমকি আসে। আমাকেও হত্যার হুমকি দেওয়া হয়।’

‘নির্বাচনের বর্ষপূর্তিতে গৃহীত সরকার বিরোধী আন্দোলনেও অনুরূপভাবে অত্যাচার নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এদেশের সংখ্যালঘুরা। এ মাসে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে; যার পরিমাণ ৮৩টি।’

‘হলি হার্টিজন ও শোলাকিয়া ঈদের জামাতে হামলার ঘটনা পর থেকে সরকার জিরো টলারেন্স এ গেছেন। আমরা লক্ষ্য করেছি সেই সময় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং বঙ্গবন্ধুর বিচার কাজ সম্পন্ন করতে বাধা দেয়া ছিল সন্ত্রাসীদের মূল লক্ষ। জঙ্গিদের মূল টার্গেট ছিল সরকারকে অস্ততিশীল করা। বর্তমান সরকার দক্ষতার সহিত জঙ্গি দমন করেছেন।’

বিডিনিউজআওয়ার: নির্যাতনের পর সরকার মামলা নিয়েছিল এবং বেশ ভূমিকা দেখিয়েছিল, সেটাকে কিভাবে দেখছেন?

নির্মল রোজারিও: ‘বর্তমান সরকার সংখ্যালঘুদের প্রতি অনেক উদার। সরকার প্রধান সব সময় আমাদের সমস্যায় সমাধানের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। সরকারের চাইনি কখনও সংখ্যালষুদের উপর নির্যাতন হোক। এক গোষ্ঠির মূল টার্গেট ছিল সরকারকে অস্থিতিশীল করা। ২০০১ সালে আমরা যখন নির্যাতনের শিকার হয়েছিলাম তখন চার দলীয় সরকার প্রধানের কাছে ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে কোন সহযোগিতা পায়নি। সাহায্যের জন্য গিয়ে আমরা উপহাসের পাত্র হয়েছি।’

‘কিন্তু বর্তমান সরকার সংখ্যালঘুদের প্রতি অনেক উদার। ব্যাপক সাহায্য সহযোগিতা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিপদে পড়লে তিনি আমাদের আশ্রয়স্থল হয়ে আমাদের পাশে দাঁড়ান। বর্তমান সরকার সংখ্যালঘু বান্ধব সরকার। বিএনপি-জামাত সরকারের সময় ২০০১ সালে বানিয়ার চর গীর্জাতে বোমা হামলা হয়ে ছিল কিন্তু এখনও সেই মামলার চার্জশীট জমা হয়নি।’

বিডিনিউজআওয়ার: আপনারা কেমন সরকার গঠনে আশাবাদী?

নির্মল রোজারিও: ‘আমরা এই দেশের নাগরিক হিসেবে নির্বাচনে আমরা ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে চাই৷ আমদের দেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে নির্বাচনে এমন একটি সরকার যেন আসে যে দেশ এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে। আমরা আর যেন পিছিয়ে না পড়ি। তাই সঠিক বিবেচনা করে আমাদের ভোটধিকার প্রয়োগ করতে হবে। বর্তমান সরকার দেশকে উন্নয়নশীল দেশে নিয়ে গেছে। তাই আমরা কোন দলের কথা না চিন্তা না করে দেশের জন্য চিন্তা করব। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এগিয়ে যাচ্ছে তাই আমাদেরও এগিয়ে যেতে হবে। বর্তমান সরকার অনেক মেগা প্রকল্প হাতে নিয়েছে সেগুলোর বাস্তবায়ন অবশ্যয় দরকার আছে; না হলে আমরা পিছিয়ে পড়ব। বঙ্গবন্ধু বুদ্ধিদীপ্ত নেতৃত্ব যেমন বাংলার মানুষকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছে তেমনি শেখ হাসিনা ও তার সেই বলিষ্ঠ নেত্রীতে দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করেছে।’

বিডিনিউজআওয়ার: নতুন সরকার গঠন হলে আপনাদের দাবি দাওয়া কি থাকবে নতুন সরকারের কাছে?

নির্মল রোজারিও: ‘আমরা চাই একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে প্রতিটি নাগরিক সমান সুযোগ সুবিধা পাবে। ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, শ্রেণি, গোষ্ঠী, বা সম্প্রদায় যা-ই হোক না কেন, আইন যেমন সবার জন্য সমান হবে, রাষ্ট্রীয় সুযোগ সুবিধা, ধর্মীয় স্বাধীনতা, বাক-স্বাধীনতা, সাংস্কৃতিক স্বাধীনতা, সংগঠন করার স্বাধীনতা, উৎসব করার স্বাধীনতা সবার বেলায় সমান হবে। এখানে কোনো ধরনের বৈষম্য থাকবে না এটাই প্রতিটি নাগরিকের কাম্য।

কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুর অধিকার রক্ষায় রাষ্ট্রের ভূমিকা আশানুরূপ নয়। আমাদের দেশের রাষ্ট্রীয় নীতিমালা ও সামাজিক অনুশাসনে বহুত্ববাদের (Pluralism) স্বীকৃতি ও চর্চার বিষয়টি বরাবরই উপেক্ষিত হয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে এদেশের সংখ্যালঘুরা নিজদেশেই ঐতিহাসিক কাল ধরে বসবাস করা সত্ত্বেও রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে অবহেলা ও বঞ্চনা শিকার হচ্ছে। যে সরকারি ক্ষমতায় আসুক না কেনো সংখ্যালঘুদের যেনো মন্ত্রী পরিষদে রাখা হয়। বতর্মান সরকার অসম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী। তাই আমরা চাই যে সরকারি ক্ষমতায় আসুক না কেনো  সে জেনো অস্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী হয়।’

বিডিনিউজআওয়ার: সংখ্যালঘুর সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে আপনার বার্তা?

নির্মল রোজারিও: এই দেশ আমাদের, সংখ্যালঘুরা মুক্তিযুদ্ধ করে এ দেশ স্বাধীন করেছে। তাই আমাদের রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করা উচিত। কারণ দেশ গড়ার একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে রাজনীতি। তাই আমাদেরও এই দেশ গড়ার কাজে অংশগ্রহন করতে হবে। হিন্দু বোদ্ধ খ্রিষ্টায়ান তরুণরা অনেকে এখন রাজনীতি করছে। তারাও ধীরে ধীরে রাজনীতিতে নিজেদেরকে সক্রিয় করে তুলছে। দেশ গড়ার কারিগর হিসেবে নিজেদের প্রস্তুত করছে। প্রত্যাশা করি আগামী প্রজন্মের কাছে একটি সুন্দর দেশ ‘উপহার হিসেবে’ রেখে যেতে পারি।’

বিডিনিউজআওয়ার: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আমাদের সময় দেবার জন্য।  

নির্মল রোজারিও: আপনাদেরও শুভেচ্ছা রইল।

ট্যাগ:

সাক্ষাৎকার
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সফল প্রক্টরের সফলতার গল্প

banglanewspaper

প্রফেসর ড. মাহবুবর রহমানকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সেরা প্রক্টর হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। তিনি দুই দফায় প্রায় ৩ বছর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রক্টরের মত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব অত্যন্ত সফলতার সাথে পালন করেছেন। তার সময়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ অর্জন রয়েছে।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃহত্তম চতুর্থ সমাবর্তনের সফল আয়োজন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিক্রিয়াশীল শিবিরের রাজনীতি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করা, বিশ্ববিদ্যালয়ে শান্তি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা, মাদক-সন্ত্রাস- জঙ্গীবাদ নির্মূলে প্রত্যক্ষ ভূমিকা পালন, নির্ভেজাল ভর্তি পরীক্ষা গ্রহন ও যেকোন দূর্নীতির বিরুদ্ধে প্রশাসনের জিরো টলারেন্স নীতিতে প্রত্যক্ষ ভুমিকা পালন করেন।

শিক্ষার সুস্থ্য পরিবেশ ফিরিয়ে আনা সহ নিরাপদ ও পরিচ্ছন্ন ক্যাম্পাসের অন্যতম রূপকার মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. হারুন-উর-রশিদ আসকারীসহ অন্যান্য কর্তাব্যাক্তিদের অন্যতম সহযোগি হিসেবে তাকে আখ্যায়িত করা হয়। আন্তর্জাতিক করণের পথে ইবির যে পথচলা বর্তমান প্রশাসনের তিন কর্তাব্যাক্তির মাধ্যমে তার অন্যতম সহযোদ্ধা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সফলতম প্রক্টর প্রফেসর ড. মাহবুবর রহমান।

প্রক্টরের দায়িত্ব ছাড়াও ১৯৯৯ সালে ফলিত পদার্থবিজ্ঞান, ইলেক্ট্রনিক্স এন্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (বর্তমান ইইই) বিভাগের প্রভাষক হিসেবে যোগদান করার পর থেকে বিভাগের সভাপতি, বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ন হল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেছেন অত্যন্ত সফলতার সাথে। সম্প্রতি তিনি কথা বলেন বিডিনিউজআওয়ারের সাথে। সাক্ষাতকারটি নিয়েছেন সাজু আহমেদ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান পরিস্থিতি ও সফলতার কথা তুলে ধরেন তিনি। সাক্ষাৎকারটির বিশেষ অংশ তুলে ধরা হলো:

বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয়ের হঠাৎ পরিবর্তনের হাওয়া এর পেছনে কারণ কী?

ড. মাহবুবর রহমান: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় স্বাধীনতা পরবর্তী প্রথম পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়। হাটি হাটি পা পা করে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠটি চার দশক পার করেছে। দীর্ঘ চরাই-উৎরাই পার করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমানে দেশের অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে। এবং আন্তর্জাতিক করণের পথে এখন অনেকটাই এগিয়ে। আর পরিবর্তন একটি চলমান প্রক্রিয়া, ঠিক হঠাৎ কোন বিষয় নয়। প্রশাসনের দীর্ঘদিনের নিরলস পরিশ্রমের ফসল বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অগ্রযাত্রা। আর এর পেছনে অবশ্যই বড় ভূমিকা পালন করেছেন বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় ভিসি স্যারসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কর্তাব্যক্তি।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়কে আধুনিক করে গড়ে তুলতে বর্তমান প্রশাসন কী কী ব্যবস্থা গ্রহণ করছে?

ড. মাহবুবর রহমানঃ দেখুন অবস্থানগত কারণে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় অনেকটাই মফস্বল বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে পরিচিত ছিল। কিন্তু বর্তমান প্রশাসনের গুরুত্বপুর্ণ ভুমিকার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় আজ আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যলয় হিসেবে গড়ে ওঠার পথে। শিক্ষার সঠিক পরিবেশ আমরা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি, বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন ধরণের সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টি করা থেকে বিরত রাখতে পেরেছি, নিরাপদ নান্দনিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তুলতে সার্বক্ষনিক মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

নতুন ও আধুনিক বিভাগ ও কোর্স চালু সহ নতুন ফ্যাকাল্টি ও হল নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রতিটি অনুষদ, হল সহ গুরুত্বপূর্ণ সকল ভবণ ওয়াইফাইয়ের আওতায় আনা হয়েছে। দেশী ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সেমিনারের আয়োজন করা হচ্ছে। প্রশাসনিক গতিশীলতার ফল স্বরূপ সেশন জট শুণ্যের কোঠায় নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। দেশের পরিমন্ডলের বাইরে বিদেশী শিক্ষার্থী ভর্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং আশাব্যঞ্জক সাড়া পাওয়া গেছে। বেশ কিছু বিদেশী শিক্ষার্থী এ বছর ভর্তি হয়েছে। আশা করছি আগামিতে এ সংখ্যা আরো বাড়বে।

এতদিন বিদেশী শিক্ষার্থী কেন ভর্তি হয়নি? এখন কেন হচ্ছে বলে আপনি মনে করেন?

ড. মাহবুবর রহমা্নঃ আসলে এতদিন নানা সীমাবদ্ধতার কারণে আমরা বিদেশী শিক্ষার্থীকে আকৃষ্ট করতে পারিনি, কিন্তু বর্তমান প্রশাসনের দীর্ঘ মেয়াদী নানামুখী উদ্যোগের ফলে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করতে সক্ষম হয়েছি। সেশনজটমুক্ত নিরাপদ ও সুস্থ্য পরিবেশ আমরা শিক্ষার্থীদের উপহার দিতে পেরেছি। শিক্ষার এই সুষ্ঠু পরিবেশই মূলত আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করেছে।

প্রক্টর হিসেবে এবং অন্যান্য পদে দায়িত্ব পালনে আপনি কতখানি সফল বলে মনে করেন?

ড. মাহবুবর রহমা্নঃ নিজের সফলতা নিজের মুখে বর্ণনা করা শক্ত। তবুও কিছু কথা না বললে নয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্টের দায়িত্ব পালনকালে প্রবল আপত্তির মুখে জাতির পিতার ম্যুরাল ও বাংলাদেশের মানচিত্র স্থাপন আমার প্রথম সফলতা। দ্বিতীয়তঃ নিরাপত্তা ব্যায় যেকোন সময়ের চেয়ে কম অথচ সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে যে পরিবর্তনের কথা বলছেন এ পরিবর্তন হঠাৎ কিংবা আলাদিনের চেরাগের মত দূর্দৈবক্রমে আসেনি। দীর্ঘ ১৬ বছর ইবিতে সমাবর্তন আয়োজন করা সম্ভব হয়েছিল না, বর্তমান প্রশাসন সে পরিবেশ তৈরি করে দিয়েছে এবং অত্যন্ত সফল, সুন্দর ও সুশৃঙ্খলভাবে সমাবর্তন অনুষ্ঠানের আয়োজন আমরা করতে সমর্থ হয়েছি।

ইবির ঐতিহাসিক চতুর্থ সমাবর্তনে মহামান্য রাষ্ট্রপতির উপস্থিতিতে একটি ভাল মানের আয়োজন সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে। প্রতিক্রিয়াশীল হিংস্র রাজনীতিতে বিশ্বাসী ছাত্র শিবিরের রাজনীতি বর্তমান প্রশাসন সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করতে সামর্থ হয়েছে। ফলে সুস্থ রাজনৈতিক পরিবেশ বজায় রয়েছে। এছাড়া গত এক বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন ধরণের সহিংস ঘটনা ঘটেনি। এর ফলে প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনণগুলো নির্বিঘ্নে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছে। ক্যাম্পাসে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা আমরা করতে সক্ষম হয়েছি।

হলে হলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা প্রদান ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের নির্বিঘ্নে হলে ওঠার পরিবেশ তৈরি করে দিয়েছি। বহিরাগত ও অযাচিত অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে আমরা সমর্থ হয়েছি। ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার মাধ্যমে পুরো ক্যাম্পাস সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহন করেছি, ফলে অপরাধের মাত্রা কমে এসেছে। ক্যাম্পাসে শোভা বর্ধনে ফোয়ারাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বর্তমান প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল “মৃতুঞ্জয়ী মুজিব” স্থাপন করার মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি সংরক্ষণ করতে পেরেছে।

জাতীয় ও অন্তর্জাতিক পর্যায়ের সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া অনুষ্ঠানের বেশ কটি সফল আয়োজন আমরা করেছি।  দেশের সর্ববৃহৎ মাদক-সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদ বিরোধী র‌্যালি হয়েছে, হলে হলে যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য সেমিনার, আলোচনা সভা অব্যাহত রয়েছে।  বিভিন্ন জাতীয় উৎসবে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় এখন আগের চেয়ে অনেক নিরাপদ ও বর্ণিল।
 
বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের তৎপরতা বন্ধ করতে এতো সময় লাগার কারণ আসলে কী?

ড. মাহবুবর রহমা্নঃ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে আসলে দীর্ঘদিন প্রতিক্রিয়াশীলতার চর্চা হয়েছে। আমি দায়িত্ব নেবার পর থেকে তাদের অপতৎপরতা বন্ধ করার দিকে মনোনিবেশ করেছি।যেহেতু ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ কিছু ইসলামী বিভাগ চালু রয়েছে ফলে বিপুল সংখ্যক মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। তারা এখানে এসে শিবিরে জড়িয়ে পড়েছে এমন নয়, আগে থেকেই শিবিরের রাজনীতিতে যুক্ত ছিল অনেকেই।

তাই শিবির মুক্ত করতে প্রশাসনকে অনেক কৌশলি হতে হয়েছে।জঙ্গি বিরোধী বিভিন্ন কর্মসূচি, সুস্থ্ ধারার সাংস্কৃতিক পরিবেশ তৈরি, সাধারণ শিক্ষার্থীদের হল প্রশাসনের মাধ্যমে সিট বরাদ্দ প্রভৃতি কার্যক্রম হাতে নেবার মাধ্যমে শিবিরের রাজনীতি বন্ধ হয়েছে। এছাড়া নতুন নতুন বিভাগ চালু করার মাধ্যমে অনেক সাধারণ শিক্ষার্থী ভর্তি হবার ফলে মাদ্রাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থীর অনুপাত কমে এসেছে। ফলে বড় ধরনের সহিংস ঘটনা ছাড়াই প্রশাসনিক তৎপরতায় আমরা শিবিরের রাজনীতি বন্ধ করতে সমর্থ হয়েছি। এখানে প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনের ভূমিকাও প্রশংসনীয়।

একটু অন্য প্রসঙ্গ। আপনাকে অনেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মরা গাছের প্রক্টর বলে রসিকতা করে, কারণ কী?

ড. মাহবুবর রহমা্নঃ আসলে বিষয়টি রসের ছলে কেউ কেউ বলে। মূলতঃ কতৃপক্ষ আমাকে প্রধান করে ক্যাম্পাসের মরা গাছ সংরক্ষনের একটি কমিটি গঠন করেন। আমি স্টেট ও প্রকৌশল অফিসের সহায়তায় মরা গাছ কেটে ডাল ও ছাল বিক্রি করে লেবার-মিলের খরচের পরও অতিরিক্ত অর্থ ও বিপুল পরিমাণ কাঠ জমা করি।  পরবর্তিতে উপাচার্য মহোদয়ের অনুমোদনে যা বিভিন্ন বিভাগ-লাউঞ্জ-ক্যাফে-অফিসে নানা ধরনের দৃষ্টি নন্দন, প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র তৈরীর কাজে ব্যবহার করা হয়েছে এবং এখনো করা হচ্ছে। উদ্বৃত অর্থে ক্যাম্পাসে লিচু বাগান করেও বাঁকি অর্থ কোষাগারে জমা দেয়া হয়েছে। ইবির ইতিহাসে এমন ঘটনা বিরল বলে অনেকে রসিকতা করে বলে থাকতে পারে।

বর্তমান প্রশাসন এত অল্প সময়ে সর্বমহলে গ্রহনযোগ্য হওয়ার মূল কারন কি?

ড. মাহবুবর রহমানঃ নির্ভেজাল ভর্তি পরীক্ষা গ্রহন, যেকোন দূর্নীতির বিরুদ্ধে প্রশাসনের জিরো টলারেন্স নীতি এবং মাননীয় উপাচার্য- উপ উপাচার্য- ট্রেজারার মহোদয় ব্যাক্তিগত এজেন্ডা নয় বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নকে মুখ্য মনে করাই বর্তমান প্রশাসন সর্বমহলে গ্রহনযোগ্য হওয়ার মূল কারন হিসেবে আমি মনে করি।

যদি ব্যর্থতার কথা বলতে হয়?

ড. মাহবুবর রহমা্নঃ একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার দায়িত্ব পালন করতে গেলে প্রক্টরিয়াল বডিকে নানা ধরণের প্রতিকূলতার সম্মুখিন হতে হয়, অপরাজনীতির শিকার হতে হয়। তবুও আমি চেষ্টা করেছি বিতর্কের উর্ধে থেকে নিজ দায়িত্ব পালন করতে। আমি মনে করি আমার উপর প্রশাসন যে আস্থা রেখেছে সততা, নিষ্টা, স্বচ্ছতা ও কর্মদক্ষতা দিয়ে আমি তার প্রতিদান দেবার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। যদিও মাঝেমাঝে সেটি আমার জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাদক মুক্ত ক্যাম্পাস ঘোষণা এখন বড় চ্যালেঞ্জ, যা পুরোপুরি অর্জনে সফল হতে পারিনি। তবে চেষ্টা অব্যহত রয়েছে,এক্ষেত্রে সকলের সহায়তা জরুরী।

স্যার মুল্যবান সময় দেবার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

ড. মাহবুবর রহমানঃ আপনাকেও ধন্যবাদ।

ট্যাগ:

সাক্ষাৎকার
"স্রষ্টা চাইলে আপনি এঘরে না জন্মে অন্য ঘরেও জন্ম নিতে পারতেন"

banglanewspaper

হায়দার মোহাম্মাদ জিতুঃ নিজেদের মানুষ হিসেবে দাবি করি বলেই হয়তো আজ ভেতরটা কাঁদলেও বহিরাবরণে হাসির কালিমা লেপে চলছি। সম্প্রতি ঘটা ঘটনাগুলোকে সামনে রেখে এই চিন্তা করা ছাড়া আর কোন উপায় নেই।

ঠুকাঠুকির অভ্যাস আমাদের মজ্জাগত। আর তার চেয়েও পুরনো আমাদের স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা। সেই স্বাধীনতার চিন্তাকে আগলে রেখে ৪৭'এ উপমহাদেশীয় এবং ৭১'এ আমাদের স্বাধীনতা লাভ। তবে যাবার বেলাও বিদেশী প্রভুরা (!) এই তল্লাটে হিন্দু-মুসলিমের এক উৎকট দুর্গন্ধ মাখিয়ে গেছেন।

আর তাই হয়তো আজও আমরা সেই গরু-খাসির ঝামেলাকে উতরে উঠে সাম্যের জয়গান গাইতে পারিনি। বরং দিনবাদে তাকে করেছি আরো জটিল। সম্প্রতি বাংলাদেশের এক অংশে ধুন্ধুমারভাবে সংখ্যালঘু নির্যাতন এবং প্রায় ৪০০ ঘরবাড়ি লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু আশ্চর্যজনক হলেও সত্য এ বিষয়ে আমাদের অবস্থান যতটা কঠোর হবার কথা ছিল তার কানাকড়ির কোথাও মেলেনি। যদিও আমাদের গঠনতন্ত্রে বেশ ঘটা করে বলা হয়েছে অসাম্প্রদায়িকতার কথা।

দলাদলির ডামাডোলে এই সংখ্যালঘু মানুষগুলির অবস্থান এখন অনেকটা টেবিল টেনিস বলের মত। অথচ আমরা নিজেদের দাবি করি অসাম্প্রদায়িক মানুষ এবং রাষ্ট্র হিসেবে। তবে আমি মনে করি আমরা তখনই নিজেদের অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হিসেবে দাবি করতে পারব, যখন এদেশে সংখ্যালঘু বলে কোন শব্দই থাকবে না।

তবে এ ব্যাপারে দৃষ্টিভঙ্গি এবং চিন্তাভাবনার বিচারে পাশ্চাত্যরা বেশ উঁচুমানের। কেননা তারা অন্তত ব্যক্তি স্বাধীনতার পাশাপাশি ধর্মীয় দিক গুলিকেও খোলা রাখে। আরো ভিন্নভাবে বললে ওরা বোঝে যে ভিন্ন ভিন্ন মত, ধর্ম এবং সংস্কৃতি থাকলে তাদের দেশ আরো সমৃদ্ধ হবে। অর্থাৎ বৈচিত্র্যতাকে সাধুবাদ জানাতে তারা সাহস রাখে।

নিজ নিজ ধর্মের প্রতি পূর্ণ জ্ঞান থাকলে ধর্মীয় গুরুরা সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ঠেকাতে অবশ্যই ভূমিকা নিবেন। তবে এ প্রসঙ্গে আমি বলব এক ভিন্ন শ্রেণীর কথা। 

সহস্র মত পার্থক্য থাকলেও দেখা যায় দেশের ক্রিকেটে বেলায় আমরা সবাই একটা প্লাটফর্মে চলে আসি। অর্থাৎ মুক্তিযুদ্ধের পর আমরা নতুন একটা জায়গা পেয়েছি যেখানে সবাই ঐক্যবদ্ধ হতে পারি।

কাজেই অসাম্প্রদায়িক চেতনার মূল্যবোধকে বাস্তবায়নের জন্যে আমাদের ক্রিকেট এবং ক্রিকেটারদের কাজে লাগানো যেতে পারে।

মনে রাখবেন পরিবারভেদে মুসলিম কিংবা হিন্দু ঘরে আপনাকে স্রষ্টাই পাঠিয়েছেন। কাজেই স্রষ্টা চাইলে আপনি এঘরে না জন্মে ওঘরেও জন্ম নিতে পারতেন। তখন হয়তো এই আপনাকেই আপনার অস্তিত্ব রক্ষায় লড়াইয়ে সামিল হতে হত। কাজেই নিজে ভালো আছেন পরিতৃপ্তির এই ঢেঁকুরে গা না ভাসিয়ে নিঃস্বার্থভাবে সেই মানুষগুলির পাশে দাঁড়ান। সাম্যের জয় হোক.................. 


হায়দার মোহাম্মাদ জিতু
সাংগঠনিক সম্পাদক,
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

 

 

(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। বাংলাদেশ নিউজ আওয়ার-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)

ট্যাগ:

সাক্ষাৎকার
রনি'র অপরাধ আসলে কি ছিল?

banglanewspaper

মাকসুদা সুলতানা ঐক্য: সবাই যখন আন্দোলন করতে করতে হয়রান হয়ে থেমে যায় ঠিক তারপর আমি লিখি এটা আমার অভ্যাস, বলতে পারেণ বদঅভ্যাস! আমি সে দায়ও মাথা পেতে নিব। আমার লেখার জন্য প্রকৃত তথ্য, সম্পুর্ণ নির্ভুলভাবে দিতে গিয়েই এ সময়টুকু আমার লাগে।


আজ আমি বাংলাদেশের একজন সচেতন নাগরিক হয়ে সবার এর পক্ষ থেকে চট্টগ্রামের বর্তমান মাননীয় মেয়র সাহেবের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি....

আপনার কাছেই জানতে চাচ্ছি রনি" র আসলে দোষ গুলো কি কি ছিল? ও চট্টগ্রাম ছাত্রলীগের অল্প বয়সি ছেলে হয়ে কেন, ৪৫ বছরের পুরাণ শত্রু জামাত শিবিরের বিরুদ্ধে গেলো? নাকি যারা বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনের কেক কাটার সময় যারা নিজেদের প্রাক্তন দলের নেতার লেখা গান "প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ" গান গাওয়া নিয়ে ওর নিজের ওয়ালে দেয়া ১৭ মার্চের পরে পোষ্ট দেয়া সেই স্টাটাসটি? নাকি ২৬ মার্চের নাটকীয় এবং জঘন্য মিথ্যুকদের স্বাধীনতা দিবসের সেই র‍্যালীর ছবি প্রকাশ করে অবাক হওয়া স্টাটাসটি? নাকি তারপরেও প্রতিনিয়ত জামাত শিবিরের বিরুদ্ধে দেয়া স্টাটাস? নাকি প্রাক্তন মেয়র সাহেবকে নিয়ে বিভিন্ন প্রোগ্রাম করে সেটা আবার নিজের ওয়ালে পোষ্ট দেয়াটা?


এবার শুরুর কথা একটু মনে করিয়ে দিচ্ছি এ মাসের শুরুর দিকে অর্থাৎ গত ০৭ মে ২০১৬ তারিখ শনিবার বেলা সোয়া ১২টার দিকে হাটহাজারী উপজেলার মির্জাপুর থেকে নির্বাচনে দায়িত্বরত জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হারুনুর রশিদের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে রণিসহ নয়জনকে আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এসময় রনির কাছে একটি নাইন এমএম পিস্তল, ১৫ রাউন্ড গুলি ও ২৬ হাজার টাকা পাওয়া যায়। এরপর তাদের হাটহাজারী থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।


পরে ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত রণিকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন বিধিমালা ২০১৬ এর দুটি ধারায় এক বছর করে মোট দুই বছর কারাদণ্ড দেন। রোববার সকালে রণিকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। এছাড়া রণির বিরুদ্ধে হাটহাজারী থানায় অস্ত্র আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়।


চট্টগ্রামের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির ছাত্রনেতা হিসেবে পরিচিত রণিকে আটকের সময় পাঞ্জাবির কলার ধরে টানাহেঁচড়া ও শারীরিক লাঞ্চনার ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে ঘটনার দিন। এরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটে। ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী বিচারক হারুনুর রশিদ এবং হাটহাজারী থানার ওসিকে ‘জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত’ উল্লেখ বিভিন্ন বক্তব্য সহ নানা রকম কর্মসূচী তে নেমেছে। (যদিও তার আগের রাতেই রনিকে পুলিশ খুঁজছে বলেও স্থানীয় বিভিন্ন নিউজ পোর্টাল এ প্রকাশ হয়েছে। এখানেও প্রশ্ন হল রনিকে নিয়ে পরের দুপুরের ঘটনা যদি সাজানো নাটকের ফল নাই হবে তবে, তার ঠিক আগের রাতে অর্থাৎ ৬মে ২০১৬ এর রাতে কেন পুলিশ খুঁজতে গেলো? আর গেলোই যদি তখন খুঁজে ধরলো না কেন?

এর কারণ কি সবাই এটা ভাববে না যে, সেই রাতে রনি কে ধরলে এমন শক্ত কেসে ফাঁসানো যেত না বলেই ধরেণি। এবং এই যে বিশাল নাটকিয় অংশ যা সারা দেশের মানুষ জেনেছে এবং যেই ম্যাজিষ্ট্রেট সাজা দিয়েছে, সেই ম্যাজিষ্ট্রেট এর দলগত পরিচয় নিয়েও এখন প্রশ্ন উঠে আসছে এটা তাদের সম্মিলিত খেলার একটা অংশ?)


যাকগে এই ব্যাপার গুলো আমি আর নতুন করে লিখতে চাইনা। সারা দেশের পুলিশ বাহিনী সহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বীরত্বপূর্ণ কর্মকান্ডের ফলে দেশ এখন সব দিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রকৃত সন্রাসী রা ছাড় পাচ্ছেনা। এখন সত্যিকারের দেশ প্রেমী আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সকল সদস্যদের প্রতি বিনম্র শ্রোদ্ধাজ্ঞাপনের সময় এসেছে, ঠিক সেই মুহুর্তে কিছু নীতিভ্রষ্ট প্রশাসনিক লোকের এ ধরণের ন্যাক্কার জনক সাজানো নাটক সম্পর্কে কে না জানে ! আপনি নিজেও নিশ্চয় ই আরো ভাল জানেন, তবে কেন আপনি কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেন না?


আপনি তো নিজেই জানেন এই গত সপ্তাহে বিএনপির এক সিনিয়র দালালের ছবি ভিনদেশী শত্রুর সাথে তোলা, মালা বদলের ছবি ফেসবুকে প্রকাশের জের ধরে মূল তথ্য ফাঁস হওয়ার কথা। তবে আপনার যে ছবি চট্টগ্রামের জামাতের শীর্ষ নেতার সাথে কানে-মুখে কথা বলার ছবি এখনো ফেসবুকে অনেকের ওয়ালেই আছে। আজ আমি আপনাকে মনে করিয়ে দিতে আবার পোষ্ট দিলাম। তবে এটা কবে কখনকার তোলা ছবি সেটা কিন্তু কেউ খুঁটিয়ে দেখবে না, বা জানতেও চাইবেনা। আপনার সাথে জামাত নেতার এত অন্তরঙ্গ ছবি আছে এটাই সবাই দেখছে। আর এটা দেখে সেই একই যুক্তিতে আপনাকে কেন মানুষ সন্দেহর তালিকায় রাখবে না ! আর সেটাতে কি খুব অন্যায় ভাবা হবে?


আজ ১৭ মে বঙ্গবন্ধু কন্যার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে আমি জাতীর পিতার আদর্শে দীক্ষিত নাগরীক হিসেবে, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সকল ত্যাগী এবং সত্যিকারের দেশ প্রেমী নেতা কর্মীর সাথে একত্ব হয়ে আপনাকে প্রশ্ন গুলো রাখছি। আশা করছি চুপ করে এখনো বসে না থেকে, সকলের সন্দেহের তালিকা থেকে মুক্ত করার জন্য হলেও আসল তথ্য বের করে রনি" র মুক্তির জন্য আপনার করণীয় গুলো করবেন। সেই সাথে আপনি মনে প্রাণে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বিশ্বাস করে আজকের এই শুভ দিন থেকেই সত্যিকারের দেশ প্রেমী নেতা হিসেবে নিজেকে পূর্ণ প্রকাশ করে এবং জাতীর সকল সন্দেহ দূর করে, জামাতের নেতার সাথে তোলা আপনার ছবির স্বপক্ষের যুক্তি তুলে ধরবেন।


আর হ্যা আপনি নিজে একজন অত্যান্ত সম্মানীয় মানুষ, তার উপর চট্টগ্রামের মত এত বিশাল বিভাগের মাননীয় মেয়র এর পদে আছেন। তাই আপনাকে কোন ভাবেই অসম্মান করা আমার উদ্দেশ্য নয়। বরং আপনার প্রতি শ্রোদ্ধা রেখেই, আপনার বিরুদ্ধে বিভিন্ন নিউজ পোর্টালে এই ছবি নিয়ে নানা রকম বিতর্ক দেখে ক্লান্ত হয়ে আপনাকে সচেতন করতেই আজ আমার লেখা।


ভালো থাকুন, সুস্থ্য থাকুন এবং দেশ পরিচলানায় বঙ্গবন্ধু কন্যার হাতকে আরো মজবুত করে, দেশের মধ্যে লুকিয়ে থাকা সকল ষড়যন্ত্রকারীদের সমস্ত অপচেষ্টা কে রুখে দিয়ে, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার পথে এগিয়ে যান।। 

 


জয় বঙ্গবন্ধু, জয় বাংলা।।

ট্যাগ: