
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার ৭৮ নং কাশালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা তন্বী রহমান বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের নাম ভাঙ্গিয়ে ফায়দা লুটছেন। নিজেকে কখনো প্রধানমন্ত্রীর পিএস এর স্ত্রী, কখনো পুলিশ সুপারের স্ত্রী আবার কখনো সেনাবাহিনীর মেজরের স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষকদের ভয়ভীতি দিয়ে সরকারি কাজে অবহেলা করে থাকেন। সরকারি কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে দিনের পর দিন কর্তব্য কাজে অবহেলা, অনৈতিক ভাবে ছুটি ভোগ, ছাত্র-ছাত্রী ও অভিবাবকদের সাথে অসৎ আচরনসহ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও সদস্যদের সাথে খারাপ ব্যবহার ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে থাকেন বলে জানা যায়।
গতকাল সরেজমিন অনুসন্ধানে ওই এলাকায় গেলে দেখা যায়, দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত তিনি বিদ্যালয়ে উপস্থিত হননি। অথচ ওই বিদ্যালয়ে চলছে বার্ষিক পরীক্ষা। দুপুর ২টা নাগাত তিনি বিদ্যালয়ে উপস্থিত হন। বিলম্বে বিদ্যালয়ে আসার কারন জানতে চাইলে তিনি প্রথমে উত্তেজিত হয়ে বলেন, আপনি কে আপনাকে আমি এ সব কথা কেন বলতে যাব। পরে সাংবাদিক পরিচয় দিলে তিনি তখন পুনরায় উত্তেজিত হয়ে বলেন আমারও ভাই ব্রাদার সাংবাদিকতায় পেশায় আছেন। তিনি এ সময় তার মোবাইল ফোনে জনৈক এক সাংবাদিকের সাথে কথা বলতে বলেন। ওই সাংবাদিক এই প্রতিবেদকের পরিচয় নিশ্চিত হয়ে সংবাদটি না করার জন্য বার বার অনুরোধ করেন।
এ সময় তিনি আরো বলেন, আমার হাত খুব লম্বা আমার বিরুদ্ধে নিউজ টিউজ করে আমার কিছুই করতে পারবেন না। আপনারা যত পারেন আমার বিরুদ্ধে নিউজ করেন তাতে আমার কিছুই হবে না। ডিপিও সাহেব, টিও সাহেব, এটিও সাহেব আমার লোক। আমার সাথে তাদের যে সুন্দর সম্পর্ক রয়েছে তাতে তারা আমার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে পারবে না।
ওই বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী ও অভিবাবকদের সাথে কথা হলে তারা জানান, তন্বী ম্যাডাম নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসেন না। যদিও কোন দিন বিদ্যালয়ে আসেন তাও দেরি করে আসেন। আমরা কয়েকজন অভিবাবক তার বিরুদ্ধে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে মৌখিক ও লিখিত ভাবে বার বার জানালেও তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নী।
তারা আরো জানায়, তন্বী ম্যাডাম এই একই কারনে তাকে পুর্বের বিদ্যালয় থেকে এ বিদ্যালয়ে বদলী করে দেওয়া হয়। আমরা তার ব্যবহারে অতিষ্ট হয়ে উঠেছি আমরা চাই অচিরেই তাকে যেন এ বিদ্যালয় থেকে অন্যত্র বদলী করে দেওয়া হয় অথবা তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে ৭৮ নং কাশালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক লিলি রায় বলেন, তন্বী ম্যাডামের অনেক ক্ষমতা আমরা কেউ তাকে কিছু বললে তিনি আমাদেরকে বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি দেখান। আমরা ছোট চাকরি করি তাই তার বিরুদ্ধে আমরা কোন কথা বলতে পারি না। তিনি বিদ্যালয়ে যোগদানের পরের থেকে একের পর এক অনিয়ম করে যাচ্ছে।
বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক তুষার কান্তি মৃধা বলেন, আমি নিজেই তন্বী ম্যাডামকে ভয় পাই প্রশাসনসহ রাজনৈতিক নেতাদের সাথে রয়েছে তার দহরম মহরম। তিনি অধিকাংশ সময় ঢাকাতে থাকেন। তা ছাড়া তিনি আমাদের বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিসহ কাউকেই মানেন না। আর আমরা তো শিক্ষক আমাদের আর কিই বা করার আছে।
বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক সুজন কুমার টিকাদার বলেন, তন্বী ম্যাডাম নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসেন না। যদিও কোন দিন বিদ্যালয়ে আসেন তাও দেরি করে আসেন। তিনি নিজেকে কখনো প্রধান মন্ত্রীর পিএস এর স্ত্রী, কখনো পুলিশ সুপারের স্ত্রী আবার কখনো সেনাবাহিনীর মেজরের স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে থাকেন। আমরা তার বিরুদ্ধে কখনো কথা বললে তিনি আমাদেরকে চাকরি খেয়ে ফেলার ভয়ভীতি দেখান।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্র নাথ মৌলিক বলেন, তন্বী ম্যাডাম ঠিক মত বিদ্যালয়ে আসেন না। তিনি প্রতি নিয়ত ছুটি ভোগ করেন। তার কারনে আমাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থার ধ্বস নেমে এসেছে। আমি কয়েক বার আমার উপর মহলকে অবহিত করেছি কিন্তু কোন ফল পাইনি।
বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মাফিকুল ইসলাম ফকির বলেন, তন্বী ম্যাডামের কারনে আমার বিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থার ধ্বস নেমে এসেছে। আমি কিছু বললেই তিনি আমাকে প্রশাসন, রাজনৈতিক নেতা ও সাংবাদিকদের ভয় দেখান। আমি বার বার তাকে সর্তক করলেও তিনি আমার কথার কোন কর্নপাত না করে নিজের খেয়াল খুশি মত কাজ কর্ম করছেন। আমি ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য শিক্ষা অধিদপ্তরের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
মুকসুদপুর সহকারী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো: শিহাব খানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমিও শুনেছি সহকারী শিক্ষিকা তন্বী রহমান তার কাজে ফাঁকি দেয়। যদি তিনি এ রকম কাজ করতে থাকেন তাহলে আমি অবশ্যই তার শাস্তি চাই। তিনি আরো বলেন, মুলত প্রধান শিক্ষকের কাজ হচ্ছে শিক্ষক হাজিরার বিষয়ে আমাদের কাছে রিপোর্ট করার ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কেন রিপোর্ট দেননি তা আমার বোধ গম্য নয়। তবে আমি বিষয়টি দেখছি।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নরেন্দ্র নাথ মৈত্র বলেন, শিক্ষিকা তন্বী রহমানের বিরুদ্ধে আমার দপ্তরে কোন অভিযোগ আসেনী অভিযোগ আসলে আমি অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। তিনি আরো বলেন, আমি ওই বিদ্যালয়ে ভিজিটে গিয়েছিলাম তিনি দেরি করে আসাতে আমি তাকে অনুপস্থিত হাজিরা দিতে বলি। তবে তার বিষয়টি আমার নজরে রয়েছে।
এ ব্যাপারে গোপালগঞ্জ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার ব্যবহৃত মোবাইল-০১৭১১-১৬১৩৬২ নম্বরে বার বার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি।
সহকারি শিক্ষিকা তন্বীর এহেন কর্মকান্ডের ব্যাপারে প্রাথমিক ও গন শিক্ষা মন্ত্রী, প্রাথমিক ও গন শিক্ষা বিভাগের মহা পরিচালকসহ উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছে এলাকাবাসীসহ অভিজ্ঞ মহল।
ঢাকা
নাতনিকে পাশবিক নির্যাতন, নানা গ্রেপ্তার

নরসিংদীর পলাশে ৯ বছরের এক শিশু নাতনিকে পাশবিক নির্যাতন করার অভিযোগে সোহরাব সিকদার (৬০) নামে এক বৃদ্ধকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গতকাল বুধবার (২৭ জুলাই) রাতে পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল পৌর এলাকার ভাড়ারিয়া গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে পলাশ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে শিশুটির বাবা।
পুলিশ জানায়, গত ২২ জুলাই শিশুটির নানা সোহরাব সিকদার অসুস্থতার কথা বলে তার বাড়িতে শিশুটিকে রেখে আসতে বলে। পরে একই দিন সন্ধ্যা আনুমানিক সাড়ে ছয়টার দিকে শিশুটিকে বাড়িতে একা পেয়ে তার নানা সোহরাব সিকদার শিশুটিকে যৌন নির্যাতন করে। একপর্যায়ে শিশুটি চিৎকার করে নানা বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার জন্য কান্নাকাটি শুরু করলে ওইদিন রাতেই শিশুটিকে তার বাবার বাড়িতে দিয়ে আসা হয়। এরপর থেকে শিশুটির প্রচুর রক্তক্ষরণ হতে থাকে এবং শিশুটি অসুস্থ হয়ে যায়। পরে শিশুটির পরিবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটির উন্নত চিকিৎসার জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। বর্তমানে শিশুটি নরসিংদী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এ ঘটনায় গত বুধবার রাতে শিশুটির বাবা বাদী হয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিলে রাতেই থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে নানা সোহরাব সিকদারকে গ্রেপ্তার করে।
পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, ঘটনাটির অভিযোগ পাওয়ার পরপরই দ্রুত অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত নানা সোহরাব সিকদারকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে থানায় একটি মামলা হয়েছে।
ঢাকা
গাজীপুরে তুরাগ নদে মিলল নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর লাশ

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের গাছা পলাশোনা এলাকায় তুরাগ নদ থেকে ভাসমান অবস্থায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তার নাম মোয়াজের বিন আলম (২৩)।
সোমবার সকালে পলাশোনা উত্তরপাড়ার পিবিসি ইটভাটার পূর্ব পাশ থেকে লাশটি উদ্ধার করেছে টঙ্গী নৌ ফাঁড়ি পুলিশ।
মোয়াজের বিন আলমের বাবার নাম রেজাউল আলম ওরফে হিরো। রেজাউল আলম পরিবার নিয়ে ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ব্লক এফের ১০ নম্বর রোডের ১২৩ নম্বর বাসায় থাকেন। এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন গাছা থানায় একটি মামলা করেছেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, গত শনিবার মোয়াজের তাঁদের বসুন্ধরার বাসা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশে বের হন। এরপর আর ফেরেননি তিনি। এ ঘটনায় ভাটারা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়।
সোমবার সকাল ১০টার দিকে পলাশোনা এলাকার তুরাগ নদের পূর্বপাড়ে একটি লাশ ভাসতে দেখেন এলাকাবাসী। খবর পেয়ে গাছা থানা পুলিশ ও টঙ্গী নৌ পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে। পরে রেজাউল আলম গিয়ে লাশটি শনাক্ত করেন।
এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন বলেন, রোববার গাজীপুর মেট্রোপলিটন বাসন থানার ইসলামপুর এলাকায় তুরাগ নদের পাড় থেকে মোয়াজেরের পোশাক উদ্ধার করা হয়। পরে সোমবার সকালে পলাশোনা এলাকায় তুরাগ নদ থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়।
লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানান ওসি ইসমাইল হোসেন।
ঢাকা
টাঙ্গাইলে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্বির প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ

টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইল নাগরপুর উপজেলা বিএনপি নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দাম বৃদ্বির প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে।
শনিবার (৫ মার্চ) নাগরপুর উপজেলা বিএনপি সাবেক ভারপাপ্ত আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ ছালাম সভাপতিত্বে পালিত হয়েছে এ বিক্ষোভ প্রতিবাদ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন নাগরপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ন আহবায়ক মোঃ শরিফ উদদীন আরজু, মো. হাবিবুর রহমান হবি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ সেলিম মিয়া, যুবদলের আহবায়ক মোঃ ফনির হোসেন ভূইয়া, সদস্য সচিব মোঃ রফিকুল ইসলাম দিপন মোল্লা, ভাদ্রা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ হাবিব মিয়া, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মোঃ নজরুল ইসলাম, সেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক
মোঃ শাজাহান শাজু, সদস্য সচিব মোঃ জিহাদ হোসেন ডিপটি প্রমুখ।
এ সময় বক্তারা বলেন, চাল, ডাল, তৈল সহ সকল পন্যের দম কমাতে হবে। দেশের মানুষের আয়ের সাথে খাদ্য দ্রব্যের আকাশ ছোঁয়া দামের আজ দিশেহারা বাঙালী। খাদ্যদ্রব্যের এ আকাশছোঁয়া দামের জন্য দায়ী এই সরকার। দেশের মানুষের আয়-ব্যয়ের সাথে সামাঞ্জস্য প্রয়োজন। সরকার এই সামঞ্জস্য বজায় না রাখতে পারলে এই সরকারের পতন ঘটানো হবে।
ঢাকা
পাত্রী দেখে মোটরসাইকেলে ফেরার পথে প্রাণ গেল প্রবাসীর

টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে গাছের সাথে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় আব্দুল্লাহ (২২) নামে মালয়েশিয়াপ্রবাসী এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার পেচারআটা-সলিং আঞ্চলিক সড়কের মোচারবাড়ী মোড়ে।
নিহতের পরিবার ও স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর ইউনিয়নের রফিকুল ইসলামের ছেলে মো. আব্দুল্লাহ সম্প্রতি মালেয়েশিয়া থেকে দেশে ফেরেন। শনিবার তিনি বিয়ের জন্য পাত্রী দেখে বন্ধুকে নিয়ে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন। তারা উপজেলার পেচারআটা-সলিং আঞ্চলিক সড়কের মোচারবাড়ী মোড়ে পৌঁছলে মোটরসাইকেলটি সড়কের পাশের শিমুলগাছের সাথে ধাক্কা খায়। তাঁর বন্ধু অক্ষত থাকলেও ঘটনাস্থলেই আব্দুল্লাহর মৃত্যু হয়।
ঢাকা
বিয়ের পরেও স্ত্রীর মর্যাদা পেতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছে জুলিয়া!

জসিউর রহমান লুকন, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার ভাদ্রা ইউনিয়নের মৃত রজব মিয়ার মেয়ে জুলিয়া আক্তার জুলি স্ত্রীর মর্যাদা পেতে দ্বারে দ্বারে ঘুরেও পাননি কোনো সহায়তা।
ভুক্তভোগীর সাথে কথা বলে জানা যায়, একই ইউনিয়নের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. বাছেদ খান ওরফে বাচ্চু মাষ্টারের ছেলে মো. রাকিব খানের সাথে প্রেমে সম্পর্কের একপর্যায়ে বিয়ে হয় তাদের।
গত ২৪ অক্টোবর ২০২১ সালে ভাদ্রা ইউনিয়নের কাজী মো. আবুল বাশার ৮ লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করে বিয়ে পড়ান। বিয়েতে ভাদ্রা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মো. সাইফুল ইসলামসহ উপস্থিত ছিলেন অনেকেই। বিয়ের পর যথারীতি নতুন সংসার শুরু করে নবদম্পতি। প্রেমের শুরু থেকেই রাকিবের বড়লোক বাবা বিভিন্ন সময়ে হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিল। বিয়ের কথা শুনে ছেলে রাকিবকে বাবা বাড়িতে আসতে না দেওয়ায়, নবদম্পতি আশ্রয় নেয় নানা শাশুড়ী বাড়িতে। এসব দেখে বাচ্চু মাষ্টার ছেলে হারানোর অভিযোগ দায়ের করে থানায়। অভিযোগের ভিত্তিতে প্রায় ১ মাস পর, থানা পুলিশ নবদম্পতি উদ্ধার করে তাদের অভিভাবকদের কাছে ফিরিয়ে দেয়। আর তখন থেকেই জুলিয়ার সুখের সংসারে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার।
অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে বলেন, তখন থেকেই রাকিকে ওর বাবা বাড়িতে আটকে রেখেছেন। আমি রাকিবের বাড়িতে গেলে, ওরা মা সহ অনেকেই আমার কাছে বিয়ের কাবিননামা চায়, তখন হাতে কাবিননামা না থাকায়, আমাকে পশুর মত পিটিয়ে বাড়ি থেকে টেনে ছিড়ে বেড় করে দেয়। সাথে থাকা মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। ফোনে ছিলো আমাদের প্রেম ও বিয়ের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছবি এবং ভিডিও। পরে রাস্তায় অচেতন অবস্থায় ফেলে চলে যায়। এলাকাবাসী আমাকে উদ্ধার করে আমাদের বাড়িতে পৌঁছে দেয়। পরে সুস্থ হলে ভাদ্রা ইউনিয়নের কাজী মো. আবুল বাশারের কাছে আমাদের বিয়ের কাবিননামা আনার জন্য গেলে, তিনি বিভিন্ন অযুহাতে দিনের পর ঘোরাতে থাকেন। আজ পর্যন্ত তিনি কাবিননামা বা বিয়ের কোনো প্রামানপত্র দেয়নি। তবে, লোক মুখে শুনেছি ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে বাশার কাজী আমাদের বিয়ের রেজিষ্ট্রেশন বাতিল করেছে।
তবে তিনি বিয়ের রেজিষ্ট্রেশন বাতিল করেছেন কি না তা এখনো সঠিকভাবে বলেনি।
জুলিয়া আরও বলেন, রাকিবের বাবা ও তার পরিবারের সকলে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মনগড়া বিভিন্ন কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য রটাচ্ছে। আমাদের বাসায় এসে বলে গেছেন, টাকা যত লাগে আমি খরচ করবো, তাও তোর মত ছোটলোকের খারাপ চরিত্রের মেয়েকে আমার বাড়ির বৌ করে আনবো না। আমার প্রতি যে অন্যায় করা হয়েছে, আমি তার ন্যায় বিচার চাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার আকুল আবেদন, আমাকে স্বামীর সংসার করার জন্য সহায়তা দান করুন।
রাকিব ও জুলিয়ার বিয়ের বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ খবর নিতে ভাদ্রা ইউনিয়নের কাজী মো. আবুল বাশারের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, গত ২৪ অক্টোবর রাকিব ও জুলিয়ার বিবাহ তিনি পরিয়েছিলেন। কিন্তু ৩১ অক্টোবর রাকিব-জুলিয়ার বিয়ের রেজিষ্ট্রেশন বাতিল করেন। তবে আবুল বাশার এ বিষয়ে ক্যামেরার সামনে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়ননি। ক্যামেরা বের করা মাত্র তিনি দৌড় দেন।
বিয়ের বিষয়ে রাকিবের বাবা মো. আব্দুল বাছেদ ওরফে বাচ্চু মাষ্টারের বাড়িতে গেলে, তাদের বাড়ি তালাবন্ধ দেখা যায়। পরে, তিনি মুঠোফোনে জানান, চরিত্রহীনা মেয়েকে ছেলের বৌ হিসেবে মেনে নিতে রাজী নন। এছাড়াও বিয়ের সময় রাকিব বিয়ের অনুপযুক্ত ছিল। তাই কাজী রাকিবের বিয়ের রেজিষ্ট্রেশন বাতিল করেন। তবে কথার প্রসঙ্গে তিনি স্বীকার করেন শরিয়ত মোতাবেক রাকিব ও জুলিয়ার বিয়ে এখনো বিদ্যমান। তবে তাদের বিয়ের কোনো বৈধ রেজিষ্ট্রেশন নেই।
রাকিব-জুলিয়ার বিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত হতে ভাদ্রা ইউনিয়নের স্থানীয় কমপক্ষে ১০ জনকে জিজ্ঞেস করলে, তারা সকলে একবাক্যে বলেন, এটা তো উঁচুনিচু প্রেমের বিয়ে। আমাদের ইউনিয়নে ১০ গ্রামের মানুষ এ বিয়ে সম্পর্কে জানে। এ বিয়ের ঘটনা জানেনা এমন মানুষ এলাকায় খুঁজে পাওয়া যাবে না।