
কুষ্টিয়া থেকে হুমায়ুন কবির: একটি মন্ত্র শোনার জন্য রেসকোর্স ময়দানে লক্ষ লক্ষ জনতার অপেক্ষা। একটু পরেই এসে সে মন্ত্রখানি শোনাবেন কবি। অবশেষে জনতার ঢেউ চাপিয়ে বীর বেশে মঞ্চে আসলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
শোনালেন মুক্তির মন্ত্র, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। এই একটি মাত্র ভাষণই ৭ কোটি বাঙালিকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে উদ্বুদ্ধ করেছিল। আর সেই শিউরে ওঠা শ্রুতিমধুর ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সেই ঐতিহাসিক ভাষণ পুরোপুরি আয়ত্ব করেছে মাত্র ছয় বছরের শিশুপুত্র আবু বক্কর সিদ্দিক মাহিম।
মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে কুষ্টিয়া ষ্টেডিয়ামে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে কুচকাওয়াজ, শারিরিক চর্চা ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগীতায় গ্রীণলীফ স্কুলের প্রথম শ্রনীর শিক্ষার্থী আবু বক্কর সিদ্দিক মাহিম মাইক্রোফোনের সামনে মুজিবীয় ভঙ্গিতে দাড়িয়ে আঙ্গুল তুলে বলে ওঠেন এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম, মেধাবী ও ট্যালেন্ট এই শিশু এর আগেও কোরআন তেলওয়াত ও কবিতা আবৃত্তিতে প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন।
৪ বছর বয়সে শুনে-শুনে মাহিম বঙ্গবন্ধুর ভাষণের অর্ধেকটা মুখস্ত করেন এবং তখন থেকেই বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় পুরস্কার পেয়ে আসছিলেন। বর্তমানে তার বয়স ৬বছর ২ মাস। প্রায় প্রতিদিন রাতে ভাষণ শোনে মাহিম।
শিশু মাহিমের ইচ্ছা ঐতিহাসিক এই ভাষণটি বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শোনাবে। তার কন্ঠে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুনে প্রধানমন্ত্রী তাকে কোলে তুলে আদর করবে। এটাই তার একমাত্র আকাঙ্খা।
শিশু মাহিম কুষ্টিয়ার আশিক রহমান ও স্যামলী আক্তার মম দম্পতির একমাত্র ছেলে। মাহিমের মা মম জানান, মাহিমের আগ্রহে ভাষণ মুখস্ত করানো সম্ভব হয়েছে, অবশ্য তার বাবাও চেয়েছেন।
তিনি বলেন, পুরো ভাষণ প্রথমে লিখে নিয়েছি; আমি পড়তাম, মাহিম শুনতো। পরে মোবাইল রেকডিং থেকে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শোনতে-শোনতে শিখা হয়।
খুলনা
পদ্মা সেতুর উদ্বোধনে যোগ দিতে সাইকেলে রওনা দিলেন 'স্বপ্নবাজ মোকসেদ'

যশোর প্রতিনিধি : যশোরের বেনাপোল পৌরসভার পোড়াবাড়ি গ্রাম থেকে স্বপ্নের পদ্মা সেতু স্বচক্ষে দেখতে বাইসাইকেল চালিয়ে রওনা দিয়েছেন স্বপ্নবাজ মোকসেদ আলী (৫০)।
মোকসেদ আলী নামের এই স্বপ্নবাজ পোড়াবাড়ি গ্রামের মৃত পাতলাই সরদারের ছেলে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাঙালির স্বপ্ন ও আবেগের এই পদ্মা সেতু উদ্বোধন অনুষ্ঠানে শামিল হয়ে তিনি ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকতে চান। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাকে বিশ্বের বুকে আরও একবার মাথা উঁচু করে দেওয়া দৃশ্যমান এই পদ্মা সেতু ছুঁয়ে দেখতে নিজের ব্যবহারের পুরাতন বাইসাইকেল নিয়ে তিনি রওনা হয়েছেন।
জানা যায়, ২০ জুন সোমবার ভোর ৫টা ৩০ মিনিটে ফজরের নামাজ শেষ করে যাত্রা করেন মোকসেদ। তিনি বাই-সাইকেলযোগে ইতোমধ্যেই পদ্মা সেতুর খুব কাছেই অবস্থান করছে বলে তার পরিবার সূত্রে জানা গেছে।
এ বিষয়ে বেনাপোলের সুশীল নাগরিক মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ফারুক হোসেন উজ্জ্বল বলেন, এই সেতু শুধু বেনাপোলবাসীর নয় সমস্ত বাঙালি ও বাংলার অদম্য স্বপ্ন। ‘পদ্মা বহুমুখী সেতু’ উদ্বোধন কোটি হৃদয়ের আশা আকাঙ্ক্ষার বাস্তব প্রতিফলন। এই সেতু উদ্বোধনের প্রতীক্ষায় এমন কোটি কোটি মোকসেদ তার জ্বলন্ত উদাহরণ। আমি বেনাপোলবাসীর পক্ষ থেকে তার সুস্থতা কামনা করছি এবং তিনি তার স্বপ্ন পূরণ করে সহি-সালামতে ফিরে আসুক সেই কামনা করি।
(২২ জুন) বুধবার সকালে মোকসেদ আলী মুঠোফোনে জানান, আমি স্বপ্নের পদ্মা সেতু থেকে মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরে আছি। তার পুরাতন সাইকেল সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমার সাইকেল পুরানো হলে কী হবে খুব চলে। পদ্মা সেতু সম্পর্কে কিছু বলতে বললে তিনি বলেন, আমার বহু দিনের স্বপ্ন আমি সামনে দাঁড়িয়ে স্বচক্ষে আমার নিজের টাকায় বানানো পদ্মা সেতু দেখব।
প্রধানমন্ত্রীকে কিছু বলতে চান কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি অশিক্ষিত মানুষ তেমন কথা বলতে পারি না, আমি শুধু দোয়া করি তিনি যেন আরও অনেক দিন বেঁচে থাকেন’।
খুলনা
কুষ্টিয়ায় আরও ১৭ মৃত্যু

কুষ্টিয়া করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১১ জন করোনা পজিটিভ ছিল এবং ৬ জন করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে শুক্রবার সকাল ৮টার মধ্যে তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিসংখ্যান কর্মকর্তা মেজবাউল আলম।
তিনি জানান, বর্তমানে হাসপাতালে ১৭৯ জন করোনায় আক্রান্ত রোগী এবং ৫৭ জনের উপসর্গসহ মোট ২৩৬ জন ভর্তি রয়েছে।
এদিকে পিসিআর ল্যাব এবং জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ১৭৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৫৭ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৩২ দশমিক ২০ শতাংশ।
খুলনা
বিধিনিষেধের মধ্যে ইজিবাইকে পিকআপের ধাক্কায় নিহত ৬

সারা দেশে শুরু হওয়া ১৪ দিনের কঠোরতম বিধিনিষেধের মধ্যেই বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলায় পিকআপভ্যানের ধাক্কায় ইজিবাইকের ৬ যাত্রী নিহত হয়েছে। এতে আহত হয়েছে আরও একজন। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার (২৩ জুলাই) সকাল সোয়া ৭টার দিকে উপজেলার ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে বৈলতলী প্রাইমারি স্কুল এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
ফকিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুল আনাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
ওসি জানান, পণ্যবোঝাই একটি পিকআপ মোংলার দিকে যাচ্ছিল। এসময় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ইজিবাইককে চাপা দেয় পিকআপটি। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান ইজিবাইকের ৬ যাত্রী। তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।
এ ব্যাপারে বাগেরহাট ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক গোলাম সরোয়ার জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ৬ জনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগে একজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছে এলাকাবাসী।
খুলনা
কুষ্টিয়ায় ১০০টি অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করলেন হানিফ

করোনা মহামারি পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করায় নিজের নির্বাচনী এলাকায় ১০০টি অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করে দিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য মাহবুবউল আলম হানিফ।
জানা যায়, গত ৬ ও ৭ মে ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় প্রায় এক কোটি টাকা বাজেটে কুষ্টিয়া মহিনি মিল মাঠ ও শেখ রাসেল স্টেডিয়ামে ১১ হাজার অসহায় কর্মহীন মানুষের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়। সেই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মাহবুবউল আলম হানিফ। খাদ্য বিতরণ কর্মসূচিতে এক কোটি টাকার পুরোটা খরচ হয়নি। এখান থেকে উদ্বৃত্ত টাকা দিয়েই মূলত ১০০টি অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করেন আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
কুষ্টিয়ায় করোনা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। সেখানে অক্সিজেন ছাড়া অন্যান্য চিকিৎসাসামগ্রীর ব্যবস্থা করবেন বলেও আশ্বস্ত করেন মাহবুবউল আলম হানিফ।
এদিকে কুষ্টিয়ায় করোনা পরিস্থিতি খুবই নাজুক। পরিস্থিতি বিবেচনায় কঠোর লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে পুরো জেলায়। প্রতিদিন সেখানে করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়ায় অক্সিজেনের প্রয়োজনীয়তা বাড়ছে। ক্রমবর্ধমান এই করোনা রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহ করতে কুষ্টিয়ার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। এই অবস্থায় সাংসদ মাহবুবউল আলম হানিফের উদ্যোগে সরবরাহকৃত অক্সিজেন সিলিন্ডার অনেক উপকারে আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
খুলনা
লকডাউনের চতুর্থ দিনে খুলনায় ৬০ মামলা

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে দেশে সর্বাত্মক লকডাউন চলছে। করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ নিশ্চিতকরণে খুলনা নগরীতেও প্রশাসন রয়েছে কঠোর অবস্থানে।
সেই ধারাবাহিকতায় শনিবার (১৭ এপ্রিল) লকডাউনের চতুর্থ দিনেও কঠোর অবস্থানে ছিল প্রশাসন। এদিন খুলনা জেলাজুড়ে অভিযান পরিচালনা করে ৬০টি মামলায় ৩৮ হাজার সাতশো টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের মিডিয়া সেলের সূত্রে জানা যায়, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেনের নির্দেশে এবং অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইউসুপ আলীর তত্ত্বাবধানে এদিন সমগ্র খুলনা জেলায় কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যাপক অভিযান পরিচালিত হয়।
খুলনা মহানগরে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে দিনব্যাপী মোট ছয়টি টিম অভিযান পরিচালনা করে ৪৪ মামলায় ২৬ হাজার চারশো টাকা জরিমানা করা হয়।
এছাড়া বটিয়াঘাটা, দাকোপ, পাইকগাছা ও দিঘলিয়া উপজেলায় অভিযান পরিচালনা করেন স্ব-স্ব উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনাররা (ভূমি)। এসব অভিযানে উপজেলায় মোট ১৬ মামলায় ১২ হাজার তিনশো টাকা জরিমানা করা হয়। ‘সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮’ এবং ‘দণ্ডবিধি, ১৮৬০’ এর সংশ্লিষ্ট ধারার বিধান মোতাবেক অর্থদণ্ড প্রদান করেন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটরা।
মোবাইল কোর্ট পরিচালনায় সহযোগিতা করেন পুলিশ, আনসার, এপিবিএন ও র্যাবের সদস্যরা। করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ নিশ্চিতকরণে জেলা প্রশাসনের এমন উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে।