
নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁয় পশু হাসপাতালে ভুল অস্ত্রপাচারে রাম ছাগলের বাচ্চা মেরে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ছাগলকে খাসি করার সময় অস্ত্রপাচারে মঙ্গলবার দুপুরে মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর হাসপাতালে মাঠ সহকারী আবুল কালাম আজাদকে ছাগলের মালিক অবরুদ্ধ করে রাখলে ১৫মিনিট পর অতিরিক্ত জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা গিয়ে তাকে উদ্ধার করে।
ছাগলের মালিক সুমন হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ছাগলের বাচ্চাকে খাসি করা যায়কিনা তা পশু হাসপাতালে জানতে আসছিলাম। তখন আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে কথা হলে তিনি ১০০ টাকা দিতে হবে জানান। পরে বাচ্চাটিকে বাড়ী থেকে হাসপাতালে নিয়ে আসি। এসময় বাচ্চাটিকে প্রশিক্ষার্থী সামছুর রহমান ধরে ছিল এবং আবুল কালাম আজাদ অস্ত্রপাচার করছিলেন। ভুল অস্ত্রপাচারে করায় বাচ্চাটি মারা যায়। সে অস্ত্রপাচার না জেনেই টাকার লোভে অতি উৎসাহি হয়ে এমন কাজ করেছে। আমি এর বিচার চাই। এসব অদক্ষ লোকের শাস্তি চাই।
মাঠ সহকারী আবুল কালাম আজাদ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, অসংখ্য ছাগলের বাচ্চাকে খাসি করেছি। অস্ত্রপাচারে সময় বাচ্চাটি স্টোক করায় মারা গেছে।
এসব বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোসা: শামীম নাহার এর সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ছাগলটাতো আপনাদের না। এটা নিয়ে আপনাদের এতো মাথা ব্যাথা কেন।
অপর প্রশ্নে তিনি বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য ছাগলের মালিকদের নিজ খরচে জয়পুরহাট পাঠাতে হবে। রিপোর্ট দেখে বিষয়টি জানা যাবে মূল কারণটা কি। তখন প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।
রাজশাহী
উজানের ঢলে ডুবলো হাওরের ফসল

নেত্রকোনার কয়েকটি উপজেলায় উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টির পানিতে হাওরের অধিকতর নিচু জমির প্রায় ৫০০ একর পরিমাণ বোরো ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। এভাবে ঢলের পানি আসলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এ উপজেলার ২১ হাজার হেক্টর জমির ফসলই তলিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। অপরদিকে কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলের আধা পাকা ও কাঁচা বোরো ফসল পানির নিচে তলিয়ে গেছে। হুমকির মুখে পড়েছে বেশ কয়েকটি ফসল রক্ষা বাঁধ।
খালিয়াজুরী উপজেলা কৃষি বিভাগ বলছে, এখানে ইতোমধ্যে ক্ষতি হয়েছে ১১৩ হেক্টর জমির ফসল। গত ৩০ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল সন্ধ্যা সময়ের মধ্যে এসব জমি তলিয়েছে।
খালিয়াজুরী সদরের কৃষক মনির হোসেন জানান, খালিয়াজুরীতে কমপক্ষে ৫০০ একর জমির ফসল তলিয়ে গেছে। এরমধ্যে তার নিজের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ২০ একর জমির ধান।
খালিয়াজুরীর লক্ষীপুর গ্রামের কৃষক, আনোয়ার হোসেন, আব্দুর রউফ ও ফুল মিয়া জানান, ঢলের পানিতে তলিয়ে তাদের ১৫ একর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে।
খালিয়াজুরী কৃষি কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ঢলের পানি প্রবাহ অব্যাহত রযেছে। পানির এমন প্রবাহ থাকলে সপ্তাহখানের অবস্থা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। এ উপজেলায় এবার ২১ হাজার ১২০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এম এল সৈকত শনিবার সন্ধ্যায় জানান, ভারতের চেরাপুঞ্জি থেকে বৃষ্টির পানি বাংলাদেশের সুনামগঞ্জের যাদুকাটা ও সুরমা নদী দিয়ে খালিয়াজুরীর ধনু নদীতে ঢল আকারে নামছে। তাই ৩০ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল সন্ধ্যা পর্যন্ত ধনু নদীর পানি বেড়েছে পৌনে ৬ ফুট। এরমধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় বেড়েছে ৩ ফুট।
তিনি আরও বলেন, ভারতের চেরাপুঞ্জিতে আগামী কয়েকদিনও বৃষ্টি হতে পারে বলে আবহাওয়ার পূর্বাভাস রয়েছে। সেখানে বৃষ্টি হলে কয়েক দিনের মধ্যে সেই পানি এসে তা ধনু নদীতে বিপৎসীমা অতিক্রম করবে।
নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক কাজি মো. আবদুর রহমান বলেন, নির্দিষ্ট একটি নিয়মের উচ্চতায় প্রতি বছর হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হয়। এবারও নিয়ম অনুযায়ীই বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। এখন অতিরিক্ত মাত্রায় পানি বেড়ে গেলেও আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো বালু ভর্তি বস্তা দিয়ে পানি ঠেকিয়ে বর্তমানে ঠিকে থাকা ফসল বাঁচাতে।
রাজশাহী
পঁচে গেল দেড় হাজার বিঘা জমির ধান

সম্প্রতি বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পানিতে নওগাঁর হাসাইগারী বিলে রোপণ করা প্রায় দেড় হাজার বিঘা জমির ধান পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে। খালে জলাবদ্ধতায় পানি বের হতে না পারায় রোপণ করা বোরো আবাদ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কয়েক হাজার চাষি।
বাজেভাবে খনন ও ভরাট হওয়ার কারণে এমন পরিস্থিতি বলে অভিযোগ তাদের। তবে বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষের দাবি, বিলের পানি বের করার দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প নেওয়া হলেও কৃষকদের বাধার কারণে তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। তিন সপ্তাহ আগে রোপণ করা ধান দ্রুতই বাড়ছিল। কিন্তু বিলের বিস্তৃত মাঠ সবুজ হওয়ার আগেই নেমে এলো দুর্ভোগ।
অসময়ের বৃষ্টি আর উজানের ঢলে তলিয়ে যাওয়া পানি জমি থেকে বের হতে না পারায় গত দু’সপ্তাহ ধরে তৈরি হয়েছে জলাবদ্ধতা। নওগাঁর সদর উপজেলার হাসাইগারী, বিল হামরা, প্রতাপদহ বিলে এমন পরিস্থিতি। দেড় থেকে দুই ফুট নিচে তলিয়ে অন্তত দুই হাজার বিঘা জমির ধান পচে নষ্ট হয়ে গেছে।
চাষিরা জানান, বছরে একবার বোরো মৌসুমে ধান আবাদ করেন চাষিরা। শুস্ক মৌসুমে আপদকালীন দুর্যোগে পানি বের করার জন্য ৪ বছর আগে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এলজিইডির অধীনে বিলের মাঝ দিয়ে খনন করে। তবে খননের অল্প কিছুদিন পরই তা ভরাট হয়ে যায়। অপরিকল্পিতভাবে প্রকল্প বাস্তবায়ন করায় এমন পরিস্থিতি বলে অভিযোগ তাদের।
চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতি বিঘায় তাদের ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। অসময়ের বৃষ্টিতে তারা বিপাকে পড়েছেন। স্থানীয় কৃষকরা নিকটবর্তী খালের সঙ্গে বিল সংযোগের দাবি জানান।
তবে বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষের উল্টো দাবি, স্থানীয়দের বাঁধার কারণেই বন্ধ হয়ে যায় বিলের খাল খননকাজ।
এ ব্যাপারে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ নওগাঁ রিজিয়ন-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সমসের আলী বলেন, '২০১৫-১৬ অর্থবছরে বিএমডিএ জলবায়ু ট্রান্সপ্ল্যান্ট প্রকল্পের আওতায় সদর উপজেলার প্রদাপদহ থেকে হাঁসাইগাড়ী পর্যন্ত ৩৭ কিলোমিটার খাল পুনর্খনন শুরু করা হয়। খালের অবস্থা এখনও ভালো। তবে পানি প্রবাহের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, 'কীভাবে জলাবদ্ধতা দূর করা যায়, সে বিষয়ে আমরা ইতিমধ্যে পরিকল্পনা করা শুরু করে দিয়েছি।'
জলাবদ্ধতার কারণে ২০টি গ্রামের অন্তত দুই হাজার চাষির ফসলহানি হয়েছে।
রাজশাহী
পর্নোগ্রাফি মামলায় রাবি কর্মচারি কারাগারে, বরখাস্তে প্রশাসনের গড়িমসি

পর্নোগ্রাফি মামলায় কারাগারে থাকা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং সেকশনের উচ্চমান সহকারী সুমনউজ্জামান সুমনকে এখনো বরখাস্ত করেনি প্রশাসন। অনেকের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। গত ১৩ জানুয়ারি তাকে কারাগারে পাঠান আদালত। জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানের কেউ গ্রেপ্তার হলে বা ছুটি ছাড়া অনুপস্থিত থাকলে তাকে বরখাস্ত করার বিধান থাকলেও এখনো বরখাস্ত না হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চমান সহকারী পদে কর্মরত সুমন পুঠিয়া উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক। সুমনের বাবা বদিউজ্জামান বদি বর্তমানে পুঠিয়া বেলপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারিরা জানান রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণেই বরখাস্ত হচ্ছেন না সুমন; গ্রেপ্তারকৃত আসামির চাকরিতে বহাল থাকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।
সামাজিক মাধ্যমে অশ্লীল ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে গত বছর সুমনের বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি মামলা করেন ভুক্তভোগী নারী। এ মামলায় উচ্চ আদালত থেকে আট সপ্তাহের জামিন নেন সুমন। ১৩ জানুয়ারি এই যুবলীগ নেতা উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। পরে শুনানি শেষে আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আব্দুস সালাম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী গ্রেপ্তারকৃত আসামির বরখাস্তের বিধান রয়েছে। আমাদের দপ্তর থানা ও কোর্টে যোগাযোগ করে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে। আমরা সাতদিনের মধ্যে কর্মস্থলে যোগদান করতে অভিযুক্তকে নির্দেশ দিয়েছিলাম। যেহেতু তিনি উপস্থিত হতে ব্যর্থ হয়েছেন সেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আইন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।
রাজশাহী
রামেক হাসপাতালে একদিনে আরও ২১ জনের মৃত্যু

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় ১০ জন ও উপসর্গ নিয়ে ১১ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে রাজশাহীর ৭ জন, পাবনার ৫ জন, নওগাঁর ৪ জন, নাটোরের ৩ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও ঝিনাইদহের ১ জন করে মারা গিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী। এনিয়ে রামেক হাসপাতালে করোনা ও এর উপসর্গ নিয়ে ৫৭ তম দিনে মোট ৮৩৭ জনের মৃত্যু হলো।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় রামেক হাসপাতালের দুই ল্যাবে করোনা পরীক্ষা হয়েছে ৪১৩ জনের আর করোনা শনাক্ত হয়েছে ৯৩ জনের। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ২২.৫১%।
এছাড়াও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দফায় দফায় ওয়ার্ড ও শয্যা সংখ্যা বাড়ানোর পরেও উপচে পড়ছে রোগীর সংখ্যা। এখানে করোনা ইউনিটে ২০টি আইসিইউসহ শয্যা সংখ্যা রয়েছে ৫১৩টি এর মধ্যে রোগী ভর্তি রয়েছে ৩৯৯ জন আর গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ৫৫ জন।
রাজশাহী
রামেকে করোনা ইউনিটে আরও ১৮ মৃত্যু

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার সংক্রমণ ও উপসর্গ নিয়ে আরও ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ৮ জন করোনা পজিটিভ, ৯ জন উপসর্গ নিয়ে ও শারীরিক অন্যান্য জটিলতা নিয়ে মারা গেছেন।
বুধবার (৭ জুলাই) সকাল ৯টা থেকে বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) সকাল ৯টার মধ্যে তাদের মৃত্যু হয়।
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মৃত ১৮ জনের মধ্যে ৯ জনের বাড়ি রাজশাহী জেলায়। এছাড়া নওগাঁর ৩ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ২ জন, নাটোরের ২ জন, পাবনা ও কুষ্টিয়ার একজন করে মারা গেছে। তারা সবাই করোনা সংক্রমণ ও উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন।