
ইন্দুরকানী (পিরোজপুর) প্রতিনিধি: পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে মুক্তিযুদ্ধকালীন ৭ বছরের শিশুর নাম মুক্তিযুদ্ধের তালিকায় থাকা নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃস্টি হয়েছে।
৭ বছর বয়সী এ শিশু বর্তমানে গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা এবং তিনি সরকারি সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করা সহ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ভাতাও পাচ্ছেন।
জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের মুক্তিযোদ্ধা সংজ্ঞা অনুযায়ী মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে একজন মুক্তিযোদ্ধার বয়স নূন্যতম ১৩ বছর থাকার কথা। কিন্তু ইন্দুরকানী উপজেলার বালিপাড়া গ্রামের মৃত্যু ছৈয়দ আলী সেপাইর ছেলে মোঃ আবু হানিফ মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নিজের নাম ঠিক রাখার জন্য বয়স জালিয়াতি করে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দীর্ঘ বছর ধরে সরকারি সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করে আসছেন। এলাকায় হানিফ সেপাই নামে তিনি পরিচিত।
বর্তমানে তিনি উপজেলার উত্তর বালিপাড়া রেজিস্টার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের (নব জাতীয়করন) একজন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। তার স্কুল কোড নং-৯৯৫০২০৭৯০০১। এসএসসির সনদ অনুযায়ী তার জন্ম তারিখ ১৯৬৪ সালের ৭ ফেব্রুয়ারী।
বাগেরহাট জেলার শরনখোলা উপজেলার জনতা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে তিনি ১৯৮১ সালে মানবিক শাখায় তৃতীয় বিভাগে পাশ করেন। যার রোল নং- রায়েন্দা ৫৩৫, সনদ নং-০৬৪৪৮, নিবন্ধন নং-৪২৪৯১/১৯৭৭-৭৮। এই সনদ দিয়েই তিনি ১৯৮১ সালের ১ জুলাই সহকারী শিক্ষক পদে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। জন্ম তারিখ অনুযায়ী চাকরিতে যোগদানের সময় তার বয়স ছিল ১৭ বছর ৪ মাস ২৫ দিন।
এছাড়া ২০০৮ সালে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি পরীক্ষায় জিপিএ ১.৭৫ পেয়ে এইচ এসসি পাশ করেন। শুধু মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তিই নয় ১৮ বছর পূর্ন হওয়ার আগে কিভাবে তিনি চাকরিতে প্রবেশ করলেন তা নিয়েও এখন প্রশ্ন সবার মুখে। এছাড়া জাতীয় পরিচয় পত্র অনুযায়ী তার বয়স এসএসসি সনদ অনুযায়ী একই। তার এনআইডি নাম্বার ৭৯১৯০১৫৭০৫৭২১।
জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয় মুক্তিযোদ্ধাদের বয়স প্রমানের জন্য বিগত কয়েক বছর পূর্বে একাডেমিক সনদ (এএসসি পাশের) চাইলে আবু হানিফ নিজের প্রকৃত বয়স আড়াল করে এসএসসি সনদ না দিয়ে তিনি জালিয়াতি করে অষ্টম শ্রেনীর সনদ জমা দেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ে। তাতে তার জন্ম তারিখ দেখানো হয়েছে ০৭ ফেব্রুয়ারী ১৯৫৭।
তার অষ্টম শ্রেনীর সনদে তিনি ১৩ বছর বয়স পূর্ন করে জমা দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা সাময়িক সনদ আনেন মন্ত্রনালয় থেকে। মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় আবু হানিফের মুক্তিযোদ্ধা আইডি নং- ০১০৬০৫০০৬৪, গেজেট নং-২৪৬৮ এবং মুক্তিবার্তা নং-০৬০৫০৩০০২৪। আবু হানিফের মুক্তিযোদ্ধা ডাটাবেইজ ও শিক্ষাগত পেশার ডাটাবেইজের বয়স ও শিক্ষাগত যোগ্যতার তথ্যে গড়মিল রয়েছে।
যদি তার সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা অস্টম শ্রেণি পাশ হয় তাহলে তিনি কি করে এই সনদে সহকারি শিক্ষক পদে চাকরি নিলেন এমন প্রশ্ন তুলেছেন কয়েকজন শিক্ষক।
মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে যদি তার বয়স নূন্যতম ১৩ বছর থাকতো তাহলে ২০১৭ সালে তার অবসর গ্রহনের কথা ছিল। বিধিমতে ১৯৭১ সালে যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করেছেন এমন সব মুক্তিযোদ্ধা যারা সরকারি চাকরিতে প্রবেশ করেছেন তারা ২০১৭ সালের মধ্যে অবসরে যাবেন। এছাড়া তিনি সাধারন চাকরিজীবীদের চাইতে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বাড়তি আরো ১ বছর সুবিধা ভোগ করার সুযোগ পেতে পারেন।
সে হিসেবেও ২০১৮ সালে তার অবসর গ্রহনের কথা। কিন্তু এখনও তার অবসর গ্রহনের সময় রয়েছে সাধারন কোটায় ৬বছর এবং মুক্তিযোদ্ধা কোটায় বাড়তি ১ বছর মিলিয়ে মোট ৭ বছর। এই সনদ দিয়েই মুক্তিযোদ্ধা কোটায় তার সন্তানরাও ইাতমধ্যে সরকারি চাকরি নিয়েছেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষক আবু হানিফের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধের সময় আমার বয়স যা ছিল তা আমার পিতা মাতা জানে।
এসএসসি সনদ অনুযায়ী তার জন্ম তারিখ ঠিক না থাকার বিষয় প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, এটা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক দেখবে।
পিরোজপুর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল লতিফের কাছে অভিযুক্ত শিক্ষক আবু হানিফের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এই শিক্ষকের ব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়ে কাগজ পত্র যাচাই বাছাই করে দেখব।
এ ব্যাপারে পিরোজপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সমীর কুমার বাচ্চুর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ বিষায়ক মন্ত্রনালয় মুক্তিযোদ্ধার বয়স নির্ধারন করে দিয়েছেন নূন্যতম ১৩ বছর। ১৩ বছরের কম মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়ার কোন সুযোগ নেই। এর কম যদি কারো বয়স হয় কিংবা কেউ যদি জালিয়াতি করে বয়স বাড়ায় সেটা প্রমান হলে তালিকা থেকে তিনি বাদ পড়বেন।
ইন্দুরকানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নুরুল হুদা এ ব্যাপারে বলেন, কোন মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে এরকম কোন তথ্য গোপনের অভিযোগ পেলে কাগজ পত্রের সত্যতা যাচাই করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বরিশাল
লঞ্চের ছাদেই বাসররাত!

বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা বলতে আকদ পর্যন্ত হয়েছে। লকডাউনের কারণে আর আতিথেয়তার সম্ভব হয়নি। ছুটতে হয়েছে কর্মস্থলের জন্য। নতুন বউ নিয়ে অন্তত লঞ্চের কেবিনে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল রাসেলের। তাও হলো না।
অস্বাভাবিক যাত্রীর চাপে শেষে লঞ্চের ছাদেই ঠাঁই হয়েছে নবদম্পতির। বরিশাল নদীবন্দরে কথা হয় নববিবাহিত রাসেলের বোন পারভিনের সঙ্গে। জেলার উজিরপুর উপজেলার ওটরা ইউনিয়নে তাদের বাড়ি।
পারভিন জানান, ‘বিয়ের কথাবার্তা ঠিক ছিল গত ঈদুল ফিতরে। কিন্ত তখন লকডাউন পড়বে দেখে বিয়ের আয়োজন করা হয়নি। এরপর উভয় পরিবার মিলে সিদ্ধান্ত নেয় কোরবানির ঈদে। আমরা ভেবেছিলাম আগের ১৪ দিন লকডাউন দেওয়ায় কোরবানির পর লকডাউন দেবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘এজন্য ঈদের পরের দিন বিয়ের আয়োজন করা হয়। গতকালও জানতাম না ২৩ জুলাই থেকে আবার লকডাউন দেবে। আজ দুপুরে শুনেছি তখন কেবল আকদ হয়েছে। আয়োজন ছিল খাবারের। কিন্তু লকডাউন ঘোষণার পরপরই খাওয়া-দাওয়া না করেই বউ নিয়ে ঢাকা রওনা দিয়েছি। যেতে কষ্ট হবে। কিন্তু কিছু করার নেই।’
রাসেল ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সেলসম্যানের কাজ করেন। নববধূর বাড়ি পাশের ইউনিয়নে বললেও নাম বলেননি রাসেল। নববিবাহিত রাসেল বলেন, ‘চেষ্টা করতেছি লঞ্চে একটি কেবিন সংগ্রহ করার। কিন্তু পাচ্ছি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘নতুন বউ নিয়ে এভাবে খোলা আকাশের নিচে যেতে কেমন দেখায়। আর একটা দিন পরে লকডাউন দিলে আর সমস্যা হতো না। না পারলাম কোরবানির মাংস খেতে, না পারলাম বিয়েটা করতে!’
জানা যায়, রাত ৮টায় লঞ্চটি ছেড়েছে ঢাকার উদ্দেশে। ঢাকায় পৌঁছাবে ভোরের দিকে। এর আগে সন্ধ্যা ৬টার দিকে তারা লঞ্চে ওঠে। বৃহস্পতিবার বরিশাল নদী বন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে ১০টি বিলাসবহুল লঞ্চ ছেড়ে যাবে। এর মধ্যে পারাবত-১০ লঞ্চের যাত্রী নবদম্পতি।
বরিশাল
বৌভাতে মাংস কম দেওয়ায় সংঘর্ষ, বরের চাচা নিহত

বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলায় বৌভাত অনুষ্ঠানে খাবারে মাংস কম দেওয়াকে কেন্দ্র করে বর ও কনেপক্ষের সংঘর্ষে বরের চাচা নিহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলার চাঁদপাশা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ রফিয়াদি গ্রামে মীর বাড়ি বৌভাতের প্যান্ডেলেই এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন বরিশাল মেট্রপলিটন পুলিশের এসি নাসরিন জাহান ও অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার ফজলুল করিম।
হামলায় নিহত বৃদ্ধের নাম আজহার মীর (৬৫)। তিনি ওই এলাকার মৃত মৌজে আলী মীরের ছেলে এবং বর সজীব মীরের আপন চাচা।
চাঁদপাশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান সবুজ জানিয়েছেন, দক্ষিণ রফিয়াদি গ্রামের মোতাহার মীরের ছেলে সজীব মীরের সাথে বরিশাল নগরীর কাউনিয়া সাবান ফ্যাক্টরী এলাকার আবুল কালাম হাওলাদারের মেয়ে রুনা বেগমের বিয়ে হয়। দুইদিন পূর্বে রুনা বেগমে বাবার বাড়ি থেকে শ্বশুর বাড়ি নেয়া হয় এবং মঙ্গলবার বৌভাত অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কনে বাড়ি থেকে ৪৮ জন সেই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। খাবার খাওয়ার একপর্যায়ে মাংস কম দেয়াকে কেন্দ্র করে কনে পক্ষের সাথে বর পক্ষের স্বজনদের প্রথমে তর্ক হয়। এরপর দুই গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতি ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে কনে পক্ষের মারধরে বরের চাচা আজহার মীর ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। আহত হয় উভয় পক্ষের প্রায় ১৫ জন।
স্থানীয়দের সহযোগীতায় কনের বাবা আবুল কালাম হাওলাদারসহ ওই পক্ষের ২২ জনকে ঘটনাস্থলে আটক করে থানায় নিয়েছে পুলিশ।
অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার ফজলুল করিম বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে সুরাত হালের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। আটক ২২ জনের মধ্যে অধিকাংশ শিশু ও মহিলা হওয়ায় তাদের পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
বরিশাল
বরিশালের ইলিশা-মজুচৌধুরী নৌ-রুটে নিয়ম ভেঙ্গে চলছে লঞ্চ চলাচল

বরিশাল-ভোলা ও লক্ষিপুরের মজুচৌধুরী হাট নৌরুটে লিজকৃর্ত এসটি খিজির (৫) নৌযানকে বিআইডব্লিউটি’র দেয়া নিয়ম-বিধি লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে চলাচলের সুযোগ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে ভোলার পোর্ট অফিসারের বিরুদ্ধে।
এতে করে যাত্রী সংকটের কারণে নিয়মিত ব্যাক্তি মালিকানাধীন যাত্রী পরিবহন নৌ-যান লঞ্চ এমভি পারিজাত ও এমভি দোয়েল নামের লঞ্চ দুটি আর্থিকভাবে প্রতিদিন লোকসানের মুখ দেখছেন।
সূত্র জানায়, বিআইডব্লিউটি’এ কর্তৃপক্ষ এর সমাধান যদি না করে তাহলে যেকোন সময়ে যাত্রী পরিবহন ও চলাচল বন্ধ করে দেয়া হতে পারে তাদের লঞ্চ। যদি বরিশাল থেকে এই দুটি লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়ে যায় তাহলে বর্ষা মৌসুমে বরিশাল-ইলিশা ও মজুচৌধুরী রুটের সাধারণ যাত্রীদের চরম দুর্ভোগের মুখে পড়ার সম্ভবনা রয়েছে।
মেসার্স জামান এন্টার প্রাইজের অভিযোগ ও অনুসন্ধান করে জানা গেছে, প্রতিদিন বরিশাল নৌ-বন্দর থেকে যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যাওয়া এমভি পারিজাত ভোলার ইলিশা ঘাটে যাত্রী নামিয়ে দিয়ে পুনরায় সকাল ৯.২৫মিনিটে মজুচৌধুরী উর্দ্দেশ্যে যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যায়।
একই মালিকের অপর লঞ্চ এমভি দোয়েল পাখি ভোলার ইলিশা ঘাট থেকে যাত্রী নিয়ে সকাল ১০.৩০ মিনিটে যাত্রী নিয়ে পুনরায় মজু চৌধুরী উর্দ্দেশ্যে ঘাট ত্যাগ করবে।
অপরদিকে লীজকৃর্ত সম্পদ এস.টি খিজির বিআইডব্লিউটি’র রুট পারমিট নিয়ম অনুযায়ী পরবর্তী সময় সকাল সাড়ে ১১ টায় যাত্রী নিয়ে ইলিশা ঘাট ত্যাগ করার অনুমতি রয়েছে।
এদিকে বেশ কিছুদিন যাবত এস.টি খিজির বিআইডব্লিউটি’র রুট পারমিট আইন উপেক্ষা করে এবং বরিশাল থেকে ছেড়ে যাওয়া এমভি পারিজাত ঘাটে বাদিং করার পূর্বেই ভোলার ইলিশা ঘাট থেকে যাত্রী নিয়ে সকাল পোনে নয়টার মধ্যে খিজির পল্টুন ত্যাগ করে চলে যায়।
ইলিশা ঘাট নৌ ইন্সেপেক্টর জসিম উদ্দিন ও সাজাহানের সহযোগীতায় অবৈধভাবে যাত্রী পরিবহন করার সহযোগীতা করার কারণে পরবর্তী সময়ে এমভি পারিজাত ঘাটে পৌছে যাত্রী নামিয়ে দিয়ে পুনরায় মজু চৌধুরীর উর্দ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়ার সময়ে যাত্রী সংকট ও অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতি গ্রস্থ হচ্ছে। এতে করে প্রতিদিন লোকসানের মুখে ওই লঞ্চ মালিক তাদের চলাচলের ক্ষেত্রে একরকম বন্ধ করে দেয়ার চিন্তায় রয়েছে বলে লঞ্চের মাস্টার ও স্টার্পরা বলেন।
এ বিষয়ে বরিশাল নৌ-বন্দর পল্টুন এলাকার ঘাট পরিচালনাকারী কর্মকর্তারা বলেন যদি বরিশাল থেকে পারিজাত ও দোয়েল পাখি লঞ্চ দুটি চলাচল বন্ধ হয়ে যায় তাহলে এখানকার প্রতিদিন কয়েকশত যাত্রী যারা বরিশাল হয়ে ভোলা, লক্ষিপুর ও চট্রগ্রামে আসা-যাওয়া করে সেসকল যাত্রী সাধারণরা চরম দূর্ভোগের শিকার হবেন।
একইভাবে বরিশাল নদী-বন্দর ঘাট পরিচালনাকারী ইজারাদাররাও আর্থিক ক্ষতিগ্রস্থের শিকার হবেন বলে তারা জানান।
এ ব্যাপারে বরিশাল নদী-বন্দর উপ-পরিচালক আজমল হুদা মিঠুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন আগে এ বিষয় আমাদের হাতে ছিল এখন তা ভোলা পোর্ট অফিসার দেখাশুনা করে থাকেন।
তিনি আরও জানান এস.টি খিজিরের ব্যাপারে পূর্বেও বিআইডব্লিউটি’এর নিয়ম বিধি লঙ্ঘন করে চলাচল করার বহু অভিযোগ আমাদের কাছে রয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার প্রক্রিয়া শুরুর আগেই আমাদের কাছ থেকে দপ্তর পরিবর্তন হয়েছে।
এ বিষয়ে ভোলা পোর্ট অফিসার (অতিরিক্ত) পরিচালক কামরুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি সত্যতা স্বীকার করে বলেন আমি বর্তমান করোনা পরিস্থিতির কারণে এস.টি খিজির চলাচলের অনুমতি দিয়েছি।
তিনি বলেন, ভোলার ইলিশা ঘাট থেকে প্রচুর মানুষ মজুচৌধুরী রুটে চলাচল করে এবং তারা সকাল ৬টার মধ্যে পল্টুনে ভীড় জমায় একারণেই যাত্রীদের শারীরিক দূরুত্বতা বজায় রাখতে আমি খিজির সকালে ছাড়ার অনুমতি দিয়েছি।
তবে এর পূর্বেই এমভি পারিজাত ও দোয়েল পাখি লঞ্চ কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করেছেন বলেন তিনি দাবি করেন।
এ বিষয় পরিজাত ও দোয়েল পাখি লঞ্চ কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান ভোলার পোর্ট অফিসার কামরুজ্জামানের সাথে আমাদের কোন কথা বার্তা হয় নাই। তাছাড়া রুট পারমিট প্রদান করে ঢাকা থেকে পোর্ট অফিসার এককভাবে বিআইডব্লিইটি’র নিয়ম ভেঙ্গে অন্য কোন লঞ্চ চলাচলের অনুমতি দিতে পারেন না।
আমরা যতটুকু জানি তিনি এস.টি খিজির ইজারাদার কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অর্থের চুক্তির বিনিময়ে সকাল সাড়ে ১১ টার সময়ে ছাড়ার লঞ্চ সকাল পোনে ৯ টায় ছাড়ার অনুমতি দিয়ে নিয়মিত চলাচলের রুটের লঞ্চের আর্থিক ক্ষতিগ্রস্থ করেছে। অন্যদিকে তিনি বিআইডব্লিউটি’এর একজন কর্মকর্তা হয়ে তাদের কেন্দ্রীয় আইন ভেঙ্গে অণ্য লঞ্চ চলাচলের অনুমতি দেবার কেহ না। এটা সম্পূর্ণ অবৈধ আমরা চাই যাত্রীদের সুবিধার্থে পূর্বে যে যার নিয়মে চলাচলের বিধান রয়েছে সেভাবে চলাচলের ব্যবস্থা করবেন।
বরিশাল
করোনায় যুবকের মৃত্যু, লাশ ফেলে পালালো স্বজনরা!

শেবাচিম হাসপাতালে করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ২৯ই এপ্রিল মারা যান বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার সুলতানিয়া এলাকার আবদুল সরদারের ২৫ বছর বয়সী ছেলে লিটন সরদার।
মৃত্যুর আগে বাবা মাসহ আত্বীয় স্বজন সবাই ছিলো লিটনের সঙ্গে। কিন্তু মৃত্যুর পর পরই হাসপাতাল থেকে করোনা সন্দেহ করা হলে তাৎক্ষণিক আস্তে আস্তে লাশের পাশ থেকে পালিয়ে যান স্বজনরা। মৃত্যুর এতোদিন পরও মৃতদেহ পরিবার না নেওয়ায় বিপাকে পড়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। উপায়ন্ত না পেয়ে খবর দেয়া হলো কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনকে। কোন দ্বিধা না করে মানবতার সহায়তা নিয়ে হাসপাতালে পৌছে যায় কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবক একটি টিম। মরদেহ পরিবহন থেকে শুরু করে দাফন পর্যন্ত সকল কাজ সম্পন্ন করেছেন স্বেচ্ছাসেবকরা।
জানা গেছে দেশের এই দুর্যোগ মুহূর্তে কোন রোগী মারা গেলেই তাদের পাশে স্বজন বেশে হাজির হচ্ছেন বরিশাল কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন। কোন বিনিময় বা প্রাপ্তি ছাড়াই এসব মরদেহ পরিবহন দাফনসহ সব কিছু করছেন অনায়াসে। শুধু লাশ দাফনের কাজই নয়, করোনা রোগীকে হাসপাতালে পৌছে দেয়া, এমনকি হাসপাতালে চিকিৎসায় কোন ঘাটতি হলে তাও পূরন করছেন মানবতার এই সংগঠন।স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ ও গাইড লাইন নিয়ে নিজেদের অর্থায়নে শুরু করেছে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃতদের দাফনের কাজ।
প্রতিষ্ঠানটির বরিশাল শাখার পরিচালক ফয়সাল মাহমুদ বলেন, ২০০৭ সালে বরিশালে তাদের কার্যক্রম শুরু হয়। বরিশালে তাদের ৩০ জন সদস্য রয়েছে। যারা নিজস্ব অর্থায়নে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সমাজ সেবা মূলক কাজ করে আসছেন।
তিনি বলেন, করোনা বা অপঘাতে মৃত্যুর পর তার প্রাপ্য মর্যাদা বা সম্মানটুকু তো তাকে দিতে হবে। এমন মানবিকতা থেকেই আমাদের প্রতিষ্ঠান এ কাজে নেমে পড়ে। শুরুতে নিজস্ব অর্থায়নে প্রয়োজনীয় সকল সরঞ্জাম সংগ্রহ করে কাজ শুরু করা হয়। পরবর্তীতে প্রশাসন ও বেসরকারি দু একটি সংস্থা তাদের এ কাজে কিছু সহযোগিতা করেছে। এখন পর্যন্ত বরিশাল বিভাগে ১০ জন করোনা আক্রান্ত ও সন্দেভাজন মৃত ব্যক্তির দাফন করেছে এই সংগঠনটি।
উল্লেখ্য, করোনা আক্রান্ত হয়ে বা করোনা সন্দেহভাজন কারো মৃত্যু ঘটলে প্রশাসন থেকেই সৎকার ও দাফন কাফনের জন্য তাদের খবর দেয়া হয়। তারপরও প্রয়োজন হলে বরিশাল জর্ডান রোডের বরিশাল শাখায় টেলিফোন ০৪৩১৬৪১৩৫ এবং মোবাইল ০১৮৪৮৩৭৩৫৩৫ ও ০১৮৪৮৩৭৩৫৩৭ নম্বরে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করেছে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন।
বরিশাল
পিরোজপুরে বজ্রপাতে এইচএসসি পরীক্ষার্থী‘র মৃত্যু
পিরোজপুর প্রতিনিধি: পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলায় বজ্রপাতে স্বর্ণা নামের এক এইচএসসি পরীক্ষার্থী মারা গেছে। আজ বুধবার বিকেলে ইন্দুরকানী উপজেলার পত্তাশী ইউনিয়নের রেখাখালী গ্রামের এ ঘটনা ঘটে বলে।
নিহত স্বর্ণা গোলদার (২০) ইন্দুরকানী উপজেলার পত্তাশী ইউনিয়নের রেখাখালী গ্রামের সুবাস গোলদারের কন্যা এবং সে ইন্দুরকানী কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতো। [ads]
ইন্দুরকানী থানার ওসি মো: হাবিবুর রহমান জানান, বিকেলে হঠাৎ করে ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়ে কলেজ ছাত্রী স্বর্ণা তাদের গরু আনতে বাড়ির পাশে মাঠে যায়। তখন হঠাৎ বজ্রপাতে সে মাঠে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। পরে পরিবারের লোকজন তার মরদেহ উদ্ধার করে মাঠ থেকে বাড়িতে নিয়ে আসে।