জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না, লালমনিরহাট প্রতিনিধি : মায়ের সাথে পুরাতন কাপড় সেলাই করে আঁখি মনি এবারের এসএসসিতে গোল্ডেন এ-প্লাস পেয়েছে। জন্মের পর মায়ের মুখে শুনেছে তার বাবা আলী আজম জ্বরে অসুস্থ্য হয়ে চিৎকিসার অভাবে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে নিরুদ্দেশ হয়ে গেছে। তখন থেকে মা জয়নব নেছা বাড়ির পাশে বাজারে পুরাতন কাপড় সেলাই করে সংসার চালান। বাবা হারানোর সেই কষ্ট থেকে জীর্ণশীর্ণ কুটিরে জন্ম নিয়ে আঁখি মনি এবার ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। যদিও সেই স্বপ্ন পূরণে পথে রয়েছে নানা বাঁধা ও সংশয়। তারপরও এগিয়ে যেতে চায় আঁখি মনি। তার মতে, চা বিক্রিতা থেকে যদি নরেন্দ্র মোদী ভারতের প্রধানমন্ত্রী হতে পারে, তাহলে আমি আঁখি মনি ডাক্তার হতে পাবো না কেন?
আঁখি মনি লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসিতে গোল্ডেন এ-প্লাস পেয়েছে। মা’সহ আখি মনি মধ্য গড্ডিমারী গ্রামের জনৈক সফিয়ার রহমানের বাড়িতে অশ্রিত থাকেন।
আঁখি মনি’র মা জয়নব নেছা বলেন, বাড়ির পাশে গড্ডিমারী হাটখোলা’তে পুরাতন কাপড় সেলাই করে দুই মেয়েকে নিয়ে কোন রকম বেচেঁ আছি। মেয়ের ইচ্ছা লেখাপড়া করা কিন্তু আমার সেই আর্থিক সমর্থন নেই। কিছু টাকা পেলে ওই টাকা দিয়ে নতুন কাপড় কিনে ছোট বাচ্চা ও মেয়েদের কাপড় তৈরী করে গ্রামে গ্রামে ঘুরে বিক্রি করে যে লাভ হবে তা দিয়ে মেয়ের লেখাপড়ার খরচ চালাতে পারবো। কিন্তু সেই অর্থ আমার নেই।
আঁখি মনি বলেন, যত বাঁধাই হোক, আমি এগিয়ে যাবো। আমার মত আর কেউ যেনো চিকিৎসার অভাবে বাবা হারা না হয়। সেই লক্ষেই আমাকে এগিয়ে যেতে হবে।
গড্ডিমারী দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আতোয়ার রহমান বলেন, মেয়েটি পিএসসি ও জেএসসিতে গোল্ডন এ প্লাস ও বৃত্তি পেয়েছিল। যদি সে সুযোগ-সুবিধা পায় তাহলে তার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে। এত কিছুর মাঝেও এগিয়ে যেতে চলছে আঁখি মনি’র নিরন্তর চেষ্টা। কিন্তু জীবনের ফুল ফোঁটাবে কি ভাবে? এই ভাবনা তাকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে প্রতিনিয়ত।
হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আব্দুল লতিফ বলেন, আঁখি মনি একজন মেধাবী ছাত্রী কিন্তু তারা খুবই গরীব। তার মা অন্যের বাড়িতে আশ্রিত। তার লেখাপড়ার জন্য সহযোগিতা প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, সমাজের কোন স্ব-হৃদয়বান মানুষ তার পাশে দাড়ালে সে তার লক্ষ্যে পৌছেতে পারবে। এজন্য তিনি আঁখি মনির জন্য সকলের সহযোগীতা কামনা করেছেন।
রংপুর
দুই ছেলের পাশে সমাহিত হলেন ডেপুটি স্পিকার

জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ও গাইবান্ধা-৫ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়ার দাফন সম্পন্ন হয়েছে। গাইবান্ধার সাঘাটায় শেষ জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানের দুই ছেলের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়।
সোমবার (২৫ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে সাঘাটা উপজেলার ভরতখালি ইউনিয়নের গটিয়ায় নিজ গ্রামে জানাজা শেষ পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। এ সময় সংসদ সদস্য, প্রশাসনের ব্যক্তিবর্গ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবিদসহ বিভিন্ন স্তরের কয়েক হাজার ধর্মপ্রাণ মুসুল্লি উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে দুপুরের দিকে ফজলে রাব্বী মিয়ার মরদেহ নিয়ে সাঘাটা উপজেলার বোনারপাড়া শিমুলতাইর মাঠে একটি হেলিকপ্টার অবতরণ করে। এদিন বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার উল্লা বাজারে ভরতখালি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে বর্ষীয়াণ এই রাজনীতিবিদের তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজার আগে তাকে গার্ড অব অনার প্রদর্শন করার পর সর্বস্তরের জনসাধারণ তার কফিনে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
ফজলে রাব্বী মিয়ার মেয়ে ফারজানা রাব্বী বুবলি জানান, আমেরিকার নিউইয়র্ক জামাইকা ইসলামিক সেন্টারে জাতীয় সংসদের সদ্য প্রয়াত ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে ঢাকা সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গনে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার রাত ২টার দিকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে মাউন্ট সিনাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ফজলে রাব্বী মিয়া। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। বার্ধক্যজনিত রোগ ও ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে গত ৯ মাস ধরে সেখানে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।
সোমবার সকাল পৌনে ৯টার দিকে ইকে-৫৮২ নামক বিমানের একটি ফ্লাইটে তার মরদেহ নিয়ে বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়।
ফজলে রাব্বী মিয়া ১৯৮৬ সালের তৃতীয় সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধা-৫ আসন থেকে অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টি থেকে প্রথমবার এমপি নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৮৮, ১৯৯১, ১৯৯৬ সালের সংসদ নির্বাচনেও একই আসন থেকে জাতীয় পার্টি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।
এরপর জাতীয় পার্টি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেন তিনি। ২০০১ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিলেও পরাজিত হন ফজলে রাব্বী মিয়া। তবে ২০০৮ সালে নবম, ২০১৪ সালে দশম এবং ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একই আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।
বর্ষীয়ান এই রাজনৈতিক ১৯৯০ সালে আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছেন। দশম জাতীয় সংসদ থেকে তিনি ডেপুটি স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
রংপুর
মারা গেলো পদ্মা, ভালো আছে স্বপ্ন ও সেতু

দিনাজপুরের বিরামপুরে জন্ম নেওয়া স্বপ্ন, পদ্মা ও সেতু নামে তিন শিশুর মধ্যে পদ্মা নামের শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। তবে বাকি দুই শিশু সুস্থ আছে বলে পরিবার থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে।
শনিবার (২৩ জুলাই) বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার বিনাইল ইউনিয়নের কৃষ্টবাটি গ্রামে নিজ বাড়িতে শিশু পদ্মার মৃত্যু হয়। শিশুর বাবা জাহিদুল ইসলাম মুঠোফোনে সংবাদমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
পরিবার থেকে জানানো হয়েছে, গত ১৮ জুলাই বিরামপুর ইমার উদ্দিন কমিউনিটি হাসপাতালে স্বাভাবিকভাবে তিন সন্তানের জন্ম দেন সাদিনা বেগম। নবজাতকদের নাম রাখা হয় স্বপ্ন, পদ্মা ও সেতু। সন্তানদের উন্নত চিকিৎসার জন্য দিনাজপুর এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর একদিন পর শিশুদের নিজ বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।
শিশুর বাবা জাহিদুল ইসলাম আরটিভি নিউজকে বলেন, তিন শিশুসন্তানকে বাড়িতে সুস্থ দেখে বাজারে গিয়েছিলাম। কিছুক্ষণ পর তাদের মা সাদিনা বেগম মোবাইল ফোনে পদ্মার অসুস্থতার বিষয়ে জানায়। বাড়িতে আসার আগেই শিশু পদ্মার মৃত্যু হয়। তবে স্বপ্ন এবং সেতু সুস্থ আছে।
জানতে চাইলে বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পরিমল কুমার সরকার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, পদ্মা নামের শিশুটি মারা যাওয়ার বিষয়টি মোবাইল ফোনে জেনেছি। অন্য শিশুদের হাসপাতালে এনে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য পরিবারকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
রংপুর
শ্বশুড়বাড়ি থেকে জামাইয়ের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার

নীলফামারীর সৈয়দপুরে শ্বশুড়বাড়ি থেকে আলমগীর হোসন (৩২) নামে এক জামাইয়ের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার (১৮) বিকেল ৫টার দিকে পৌর এলাকার উত্তরা আবাসনের বাঙ্গালী পট্টির ২৪/৭ নম্বর বাড়িতে।
এ ঘটনায় পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শাশুড়ী আবেদা খাতুন ওরফে হাইজানীসহ ৩ জনকে থানায় নেয়া হয়েছে। নিহত আলমগীর হোসেন একই এলাকার তছিমুদ্দীনের ছেলে। তিনি পেশায় একজন ইজিবাইক চালক।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, নিহত আলমগীর হোসেন প্রায় দশ বছর পূর্বে একই এলাকার নজরুল ইসলামের মেয়ে আতিকা পারভীনকে ভালোবেসে বিয়ে করেন। কিন্তু আলমগীরের পরিবার এ বিয়ে মেনে না নেয়ায় শ্বশুড়বাড়িতে ঘরজামাই হিসেবে বসবাস করে আসছিল।
ঘটনার দিন আলমগীর হোসেন ইজিবাইক চালিয়ে বিকেল আনুমানিক সাড়ে ৪টার দিকে শ্বশুড়বাড়িতে আসেন। এ সময় তার স্ত্রী পেশাগত কারণে উত্তরা ইপিজেডে অবস্থান করছিল।
শ্বশুড় পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা এ সময় বাড়ির বাইরে ছিলেন। বিকেল আনুমানিক ৫টার দিকে শোয়ার ঘরের বিছানায় গলাকাটা অবস্থায় আলমগীরকে দেখতে পায় তার শাশুড়ী। স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে নেয়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
খবর পেয়ে পুলিশ হাসপাতাল থেকে আলমগীরের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে। নিহতের স্ত্রী আতিকা পারভীন বলেন, বেশ কয়েকদিন ধরে স্বামী আলমগীর ঘুমের ঘোরে অসংলগ্ন কথাবার্তা বলছিলেন। এ ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে তিনি মনে করেন। তবে নিহতের বড় ভাই আতিকুল ইসলাম আত্মহত্যার বিষয়টি সাজানো উল্লেখ করে এটিকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করেন।
নীলফামারীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সৈয়দপুর সার্কেল) সারোয়ার আলম জানান, মরদেহের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখনও কোন মামলা হয়নি। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের শাশুড়ীসহ ৩ জনকে থানায় নেয়া হয়েছে।
রংপুর
স্ত্রীকে না পেয়ে এবার ফেসবুক লাইভে যুবকের আত্মহত্যা!

রাজধানীর ধানমণ্ডিতে চিত্রনায়ক রিয়াজের শ্বশুর মো. আবু মহসিন খানের ফেসবুক লাইভে এসে আত্মহত্যার রেশ এখনো কাটেনি। এরই মধ্যে এমনই আরেক কাণ্ড ঘটালেন রংপুরের পীরগাছার এক যুবক। চাচা শ্বশুড়ের বাড়ি থেকে স্ত্রীকে আনতে না পেরে তিনি ফেসবুক লাইভে এসে বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন। তার নাম ইমরোজ হোসেন রনি (৩০)। আত্মহত্যার আগে তিনি স্ত্রী, শ্বশুর, চাচা শ্বশুর ও ভায়রা এমদাদুল হককে দায়ী করেন।
শনিবার সকালে তিনি বিষপান করেন এবং রবিবার সকালে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তিনি উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের নিজ তাজ গ্রামের মৃত তৈয়ব মিয়ার একমাত্র সন্তান। এ ঘটনায় গোটা এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, ইমরোজ হোসেন রনি (৩০) বিগত ৪ বছর পূর্বে ভালোবেশে বিয়ে করেন পার্শ্ববর্তী পশ্চিম হাগুরিয়া হাসিম গ্রামের দিনমজুর বাদল মিয়ার মেয়ে শামীমা ইয়াসমিন সাথীকে। বিয়ের পর তাদের আবু শাকিব রিশাদ নামে দুই বছরের সন্তান রয়েছে। সম্প্রতি রনির কাছে দেনমোহরের ৫ লাখ টাকা ও শ্বশুর-শাশুড়ির ভরণ-পোষণ দাবি করে আসছিল তার স্ত্রী। এ নিয়ে কাউকে কিছু না বলে গত বুধবার পার্শ্ববর্তী রতনপুর গ্রামের চাচা মুকুল মিয়ার বাড়িতে চলে যান স্ত্রী সাথী। শনিবার সকালে তাকে আনতে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে ফেসবুক লাইভে আসেন ইমরোজ হোসেন রনি।
লাইভে তিনি বলেন, আমার স্ত্রী আমাকে না বলে তিন দিন আগে তার চাচা মুকুল মিয়ার বাড়িতে চলে যায়। আমি আনতে গেলে তারা আমার কাছে দেনমোহরের ৫ লাখ টাকা দাবি করে। আমি এখন ফেসবুক লাইভে এসে বিষপানে আত্মহত্যা করবো। আমার মৃত্যুর জন্য আমার স্ত্রী, শ্বশুর, চাচা শ্বশুর ও ভায়রা এমদাদুল হক দায়ী। এ বলে একটি সাদা বোতলের মুখ খুলে বিষপান করেন রনি। এসময় তার সঙ্গে এক কিশোরকে দেখা যায়। কিন্তু তার পরিচয় পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে পীরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরেস চন্দ্র বলেন, ওই যুক রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছে। লাশ ময়না তদন্ত করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে ফেসবুক লাইভে এসে আত্মহত্যার কথা জানেন না বলে জানান তিনি।
রংপুর
তিস্তার চরে সোনালী ধানের হাতছানি

রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদীর ধারে জেগে ওঠা চরের উর্বর পলিমাটিতে বোরো ধান চাষ করছেন তিস্তাপারের কৃষক। এরই মধ্যে ধান গাছ থেকে শীষ বেরুতে শুরু করেছে। সবুজ ধান গাছে ভরে উঠেছে তিস্তার ধার। অল্প পরিশ্রম ও খরচে ধান গাছে সোনালী ধানের হাতছানি দেখে চাষিদের মুখে হাসি ফুটছে।
সরেজমিনে তিস্তার চর বেষ্টিত গঙ্গাচড়া উপজেলার লক্ষীটারি,গজঘন্টা, মহিপুর, এসকেএস বাজার, মর্ণেয়াসহ বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
কথা হয় উপজেলার লক্ষীটারী ইউনিয়নের মহিপুর গ্রামের কৃষক ইলিয়াস হোসেন পটু ও দুদু মিয়ার সাথে।
তারা জানান, তিস্তার ধারে জেগে ওঠা চরের উর্বর পলিমাটিতে তিস্তাপারের বেশ কিছু কৃষক বোরো ধানের চাষ করছেন। তারা দুজনে চলতি বছর প্রায় ৪ একর তিস্তার ধারে জেগে ওঠা চরের উর্বর পলিমাটিতে বোরো ধানের চাষ করছেন।
তারা বলেন, পৌষ মাসের প্রথম দিকে বীজ তলায় চারা গাছ তৈরির পর চারা গাছের বয়স ২৫-৩০ দিন হলেই তা তুলে নিয়ে হাল চাষ ছাড়াই চরের উর্বর পলিমাটির চরে রোপন করা হয়। নদীর পানি নিকটে হওয়ায় হাত সেচ দিয়ে ধান গাছ বড় হতে থাকে। এছাড়া এ আবাদে অধিক কীটনাশক ও রাসায়নিক সারের প্রয়োজন হয়না। চৈত্র মাসে নদীতে পানি আসার আগেই বোরো ধান কর্তন করা যায় বলে জানান একাধিক কৃষক।
লক্ষীটারী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মমিনুর ইসলাম রব্বানী বলেন, চরাঞ্চলে বোরো ধান চাষ করা চাষিদের সরকারি সহায়তা দেয়া হলে তারা উৎসাহিত হয়ে আরও বেশি বোরো ধান চাষ করবেন। তিনি এসব চাষিদের সরকারি সহায়তা দেয়ার দাবি জানান।
গঙ্গাচড়া উপজেলা কৃষি অফিসার শরিফুল আলম বলেন, তিস্তার জেগে ওঠা পলিমাটির চরে চলতি বছর ব্যাপক বোরো ধানের চাষ হয়েছে। এ উপজেলার চরাঞ্চলের চাষীরা অনেক পরিশ্রমী। তারা আমাদের পরামর্শক্রমে চরের পলিমাটিতে বোরো ধান চাষ করে চালের অভাব অনেকাংশে দূর করেন।