banglanewspaper

আলফাজ সরকার আকাশ, শ্রীপুর (গাজীপুর): গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বিভিন্ন বাজারের অলিতে-গলিতে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠেছে শত শত ওষুধের দোকান।

ওষুধ প্রশাসনের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে শুধু ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন বাজারে অনেকেই ফার্মেসী দিয়ে বসে পড়েছেন ওষুধ বিক্রির ব্যবসায়। উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় গড়ে উঠেছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি আকারের বিপুল সংখ্যক ফার্মেসি।

এসব ফার্মেসি চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই উচ্চমাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক, নিষিদ্ধ, নকল, মেয়াদোত্তীর্ণ ও নিন্মমানের নানা প্রকার ওষুধ বিক্রি করছে অবাধে

ফার্মেসিগুলোতে নেই কোনো প্রশিক্ষিত ফার্মাসিস্ট। ফলে রোগ নিরাময়ের পরিবর্তে আরও জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে রোগীরা। এতে আর্থিক, শারীরিক ও সেই সঙ্গে মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন রোগী ও তাদের স্বজনেরা।

অভিযোগ রয়েছে, শ্রীপুর উপজেলার পৌরসভা ও ৮টি ইউনিয়নের বাজারে গড়ে উঠেছে ফার্মাসিস্ট ও ড্রাগ লাইসেন্সবিহীন কয়েকশ’ ফার্মেসি। ফলে সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত অপচিকিৎসার স্বীকার হচ্ছেন।

বিশেষ করে ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় ও অতিরিক্ত ভিজিটের কারণে প্রত্যন্ত এলাকার শিশু, বৃদ্ধ, যুবক এবং গর্ভবতী নারীরা বিশাল পথ দিয়ে উপজেলা সদরে রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের কাছে যায় না। তারা তাদের নিকটবর্তী বাজারের ফার্মেসির শরণাপন্ন হয়ে রোগের বর্ণনা দিয়ে ওষুধ নেয়।

উপজেলার ১টি পৌরসভা,মাওনা বাজার, এমসি বাজার, নয়নপুর বাজার, গাজীপুর বাজার, মেডিকের মোড়, নিজমাওনা বাজার, বাঁশবাড়ি বাজার, চকপাড়া মেডিকেল মোড়, জৈনা বাজার, বরমী বাজার, রাজাবাড়ি বাজার, বড়মা বাজার, কাওরাই বাজার, যুগির সিট মোড়, কাশেমপুর বাজার, বলদীঘাট বাজারসহ ৩০ থেকে ৩৫টি বাজারের কয়েকশ’ ফার্মেসির ড্রাগ লাইসেন্স ও ফার্মাসিস্টের প্রশিক্ষণ নেই।

ড্রাগ নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ, ১৯৮২-এর ৪ নম্বরের ১৩ নম্বর ধারার ‘ফার্মাসিস্টদের নিয়োগ’ শিরোনামের ২ নম্বর ধারায় উল্লেখ্য আছে- ‘কোনো খুচরা বিক্রেতা বাংলাদেশ ফার্মেসি কাউন্সিলের কোনো রেজিস্ট্রারের রেজিস্ট্রিভুক্ত ফার্মাসিস্টদের তত্ত্বাবধান ব্যতিরেকে কোনো ড্রাগ বিক্রি করতে পারবে না’। কিন্তু এসকল বিধি-বিধানকে তোয়াক্কা না করে উপজেলার অধিকাংশ ফার্মেসি চলছে প্রশিক্ষিত ফার্মাসিস্ট ছাড়াই।

অল্প পারিশ্রমিকে অদক্ষ লোক বসিয়ে বিক্রি করছে জটিল সব রোগের ওষুধ। ফলে মানহীন ভুল ওষুধ যেমন বিক্রি হচ্ছে, তেমনি এসব ওষুধ কিনে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ক্রেতারা।

সাধারণত এ, বি, সি- এই তিন ক্যাটাগরির ফার্মাসিস্ট রয়েছে দেশে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফার্মেসি বিভাগে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রিধারীরা হলেন- ‘এ’ ক্যাটাগরির। চার বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা কোর্সধারীরা ‘বি’ ক্যাটাগরির। আর তিন মাসের কোর্সধারীরা ‘সি’ ক্যাটাগরির ফার্মাসিস্ট। উপজেলার যে সকল ফার্মেসিতে ফার্মাসিস্ট রয়েছে তাদের ৯৯ শতাংশই ‘সি’ ক্যাটাগরির ফার্মাসিস্ট।

এমনও রয়েছে যারা কোনো ক্যাটাগরিতেই পড়ে না। যাদের ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা মাধ্যমিক পাস। ফার্মেসিগুলো কোনো চিন্তাভাবনা না করেই ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ব্যতীত সিপ্রোফ্লোক্সাসিলিন, এজিথ্রোমাইসনসহ অনেক হাই অ্যান্টিবায়োটিক, ঘুমের ট্যাবলেট, ব্যথানাশক ও যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট অবলীলায় বিক্রি করছে।

জানা গেছে, ভেজাল ও নিন্মমানের ওষুধ বিক্রির ক্ষেত্রে ভালো মানের ওষুধের চেয়ে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ বেশি কমিশন দেওয়া হচ্ছে। এতে করে বেশি লাভের আশায় ভেজাল ও নিন্মমানের ওষুধ বিক্রিতে বেশি আগ্রহী হচ্ছে ওষুধ ব্যবসায়ীরা। সাধারণ মানুষও কোন ওষুধটি আসল কোনিট নকল তা চিহ্নিত করতে অপারগ।

এর ফলে ভেজাল ও নিন্মমানের ওষুধের বাণিজ্য দিন দিন সম্প্রসারিত হচ্ছে। আর স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে সাধারণ মানুষ। অনুমোদনহীন নকল, মেয়াদোত্তীর্ণ ও নিম্নমানের ওষুধ বিক্রি বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান জরুরি বলে মনে করছেন এলাকার সচেতন মহল। 

এ ব্যাপারে শ্রীপুর উপজেলা ঔষধ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারন সম্পাদক ও সানজিদা মেডিকেল হলের স্বত্ত্বাধিকারী আলহাজ্ব এম এ সাত্তার জানান, ওষুধ প্রশাসনের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে শুধু ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন বাজারে অনেকেই ফার্মেসী দিয়ে বসে পড়েছেন। এখানে প্রায় ৫’শতাধিক ফার্মেসি রয়েছে তাদের মধ্যে হাতে গনা কয়েকজনের ড্রাগ লাইসেন্স আছে।

এব্যাপারে ঔষধ প্রশাসনিক কর্মকর্তা আকতার হোসেনের মুঠোফেনে একাধিক বার যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

ট্যাগ: Banglanewspaper শ্রীপুর বিনা লাইসেন্স ফার্মেসি

ঢাকা
নাতনিকে পাশবিক নির্যাতন, নানা গ্রেপ্তার

banglanewspaper

নরসিংদীর পলাশে ৯ বছরের এক শিশু নাতনিকে পাশবিক নির্যাতন করার অভিযোগে সোহরাব সিকদার (৬০) নামে এক বৃদ্ধকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গতকাল বুধবার (২৭ জুলাই) রাতে পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল পৌর এলাকার ভাড়ারিয়া গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে পলাশ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে শিশুটির বাবা।

পুলিশ জানায়, গত ২২ জুলাই শিশুটির নানা সোহরাব সিকদার অসুস্থতার কথা বলে তার বাড়িতে শিশুটিকে রেখে আসতে বলে। পরে একই দিন সন্ধ্যা আনুমানিক সাড়ে ছয়টার দিকে শিশুটিকে বাড়িতে একা পেয়ে তার নানা সোহরাব সিকদার শিশুটিকে যৌন নির্যাতন করে। একপর্যায়ে শিশুটি চিৎকার করে নানা বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার জন্য কান্নাকাটি শুরু করলে ওইদিন রাতেই শিশুটিকে তার বাবার বাড়িতে দিয়ে আসা হয়। এরপর থেকে শিশুটির প্রচুর রক্তক্ষরণ হতে থাকে এবং শিশুটি অসুস্থ হয়ে যায়। পরে শিশুটির পরিবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটির উন্নত চিকিৎসার জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। বর্তমানে শিশুটি নরসিংদী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

এ ঘটনায় গত বুধবার রাতে শিশুটির বাবা বাদী হয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিলে রাতেই থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে নানা সোহরাব সিকদারকে গ্রেপ্তার করে।

পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, ঘটনাটির অভিযোগ পাওয়ার পরপরই দ্রুত অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত নানা সোহরাব সিকদারকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে থানায় একটি মামলা হয়েছে।

ট্যাগ:

ঢাকা
গাজীপুরে তুরাগ নদে মিলল নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর লাশ

banglanewspaper

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের গাছা পলাশোনা এলাকায় তুরাগ নদ থেকে ভাসমান অবস্থায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তার নাম মোয়াজের বিন আলম (২৩)। 

সোমবার সকালে পলাশোনা উত্তরপাড়ার পিবিসি ইটভাটার পূর্ব পাশ থেকে লাশটি উদ্ধার করেছে টঙ্গী নৌ ফাঁড়ি পুলিশ।

মোয়াজের বিন আলমের বাবার নাম রেজাউল আলম ওরফে হিরো। রেজাউল আলম পরিবার নিয়ে ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ব্লক এফের ১০ নম্বর রোডের ১২৩ নম্বর বাসায় থাকেন। এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন গাছা থানায় একটি মামলা করেছেন।

মামলায় উল্লেখ করা হয়, গত শনিবার মোয়াজের তাঁদের বসুন্ধরার বাসা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশে বের হন। এরপর আর ফেরেননি তিনি। এ ঘটনায় ভাটারা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়।

সোমবার সকাল ১০টার দিকে পলাশোনা এলাকার তুরাগ নদের পূর্বপাড়ে একটি লাশ ভাসতে দেখেন এলাকাবাসী। খবর পেয়ে গাছা থানা পুলিশ ও টঙ্গী নৌ পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে। পরে রেজাউল আলম গিয়ে লাশটি শনাক্ত করেন।

এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন বলেন, রোববার গাজীপুর মেট্রোপলিটন বাসন থানার ইসলামপুর এলাকায় তুরাগ নদের পাড় থেকে মোয়াজেরের পোশাক উদ্ধার করা হয়। পরে সোমবার সকালে পলাশোনা এলাকায় তুরাগ নদ থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়।

লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানান ওসি ইসমাইল হোসেন।

ট্যাগ:

ঢাকা
টাঙ্গাইলে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্বির প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ 

banglanewspaper

টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইল নাগরপুর উপজেলা বিএনপি নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দাম বৃদ্বির প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে। 

শনিবার (৫ মার্চ) নাগরপুর উপজেলা বিএনপি সাবেক ভারপাপ্ত আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ ছালাম সভাপতিত্বে পালিত হয়েছে এ বিক্ষোভ প্রতিবাদ।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন নাগরপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ন আহবায়ক মোঃ শরিফ উদদীন আরজু, মো. হাবিবুর রহমান হবি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ সেলিম মিয়া, যুবদলের আহবায়ক মোঃ ফনির হোসেন ভূইয়া, সদস্য সচিব মোঃ রফিকুল ইসলাম দিপন মোল্লা, ভাদ্রা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ হাবিব মিয়া, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মোঃ নজরুল ইসলাম, সেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক
মোঃ শাজাহান শাজু, সদস্য সচিব মোঃ জিহাদ হোসেন ডিপটি প্রমুখ।

এ সময় বক্তারা বলেন, চাল, ডাল, তৈল সহ সকল পন্যের দম কমাতে হবে। দেশের মানুষের আয়ের সাথে খাদ্য দ্রব্যের আকাশ ছোঁয়া দামের আজ দিশেহারা বাঙালী। খাদ্যদ্রব্যের এ আকাশছোঁয়া দামের জন্য দায়ী এই সরকার। দেশের মানুষের আয়-ব্যয়ের সাথে সামাঞ্জস্য প্রয়োজন। সরকার এই  সামঞ্জস্য বজায় না রাখতে পারলে এই সরকারের পতন ঘটানো হবে।

ট্যাগ:

ঢাকা
পাত্রী দেখে মোটরসাইকেলে ফেরার পথে প্রাণ গেল প্রবাসীর

banglanewspaper

টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে গাছের সাথে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় আব্দুল্লাহ (২২) নামে মালয়েশিয়াপ্রবাসী এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার পেচারআটা-সলিং আঞ্চলিক সড়কের মোচারবাড়ী মোড়ে।

নিহতের পরিবার ও স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর ইউনিয়নের রফিকুল ইসলামের ছেলে মো. আব্দুল্লাহ সম্প্রতি মালেয়েশিয়া থেকে দেশে ফেরেন। শনিবার তিনি বিয়ের জন্য পাত্রী দেখে বন্ধুকে নিয়ে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন। তারা উপজেলার পেচারআটা-সলিং আঞ্চলিক সড়কের মোচারবাড়ী মোড়ে পৌঁছলে মোটরসাইকেলটি সড়কের পাশের শিমুলগাছের সাথে ধাক্কা খায়। তাঁর বন্ধু অক্ষত থাকলেও ঘটনাস্থলেই আব্দুল্লাহর মৃত্যু হয়।

ট্যাগ:

ঢাকা
বিয়ের পরেও স্ত্রীর মর্যাদা পেতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছে জুলিয়া!

banglanewspaper

জসিউর রহমান লুকন, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার ভাদ্রা ইউনিয়নের মৃত রজব মিয়ার মেয়ে জুলিয়া আক্তার জুলি স্ত্রীর মর্যাদা পেতে দ্বারে দ্বারে ঘুরেও পাননি কোনো সহায়তা। 

ভুক্তভোগীর সাথে কথা বলে জানা যায়, একই ইউনিয়নের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. বাছেদ খান ওরফে বাচ্চু মাষ্টারের ছেলে মো. রাকিব খানের সাথে প্রেমে সম্পর্কের একপর্যায়ে বিয়ে হয় তাদের।

গত ২৪ অক্টোবর ২০২১ সালে ভাদ্রা ইউনিয়নের কাজী মো. আবুল বাশার ৮ লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করে বিয়ে পড়ান। বিয়েতে ভাদ্রা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মো. সাইফুল ইসলামসহ উপস্থিত ছিলেন অনেকেই। বিয়ের পর যথারীতি নতুন সংসার শুরু করে নবদম্পতি। প্রেমের শুরু থেকেই রাকিবের বড়লোক বাবা বিভিন্ন সময়ে হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিল। বিয়ের কথা শুনে ছেলে রাকিবকে বাবা বাড়িতে আসতে না দেওয়ায়, নবদম্পতি আশ্রয় নেয় নানা শাশুড়ী বাড়িতে। এসব দেখে বাচ্চু মাষ্টার ছেলে হারানোর অভিযোগ দায়ের করে থানায়। অভিযোগের ভিত্তিতে প্রায় ১ মাস পর, থানা পুলিশ নবদম্পতি উদ্ধার করে তাদের অভিভাবকদের কাছে ফিরিয়ে দেয়। আর তখন থেকেই জুলিয়ার সুখের সংসারে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। 

অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে বলেন, তখন থেকেই রাকিকে ওর বাবা বাড়িতে আটকে রেখেছেন। আমি রাকিবের বাড়িতে গেলে, ওরা মা সহ অনেকেই আমার কাছে বিয়ের কাবিননামা চায়, তখন হাতে কাবিননামা না থাকায়, আমাকে পশুর মত পিটিয়ে বাড়ি থেকে টেনে ছিড়ে বেড় করে দেয়। সাথে থাকা মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। ফোনে ছিলো আমাদের প্রেম ও বিয়ের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছবি এবং ভিডিও। পরে রাস্তায় অচেতন অবস্থায় ফেলে চলে যায়। এলাকাবাসী আমাকে উদ্ধার করে আমাদের বাড়িতে পৌঁছে দেয়। পরে সুস্থ হলে ভাদ্রা ইউনিয়নের কাজী মো. আবুল বাশারের কাছে আমাদের বিয়ের কাবিননামা আনার জন্য গেলে, তিনি বিভিন্ন অযুহাতে দিনের পর ঘোরাতে থাকেন। আজ পর্যন্ত তিনি কাবিননামা বা বিয়ের কোনো প্রামানপত্র দেয়নি। তবে, লোক মুখে শুনেছি ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে বাশার কাজী আমাদের বিয়ের রেজিষ্ট্রেশন বাতিল করেছে।

তবে তিনি বিয়ের রেজিষ্ট্রেশন বাতিল করেছেন কি না তা এখনো সঠিকভাবে বলেনি।

জুলিয়া আরও বলেন, রাকিবের বাবা ও তার পরিবারের সকলে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মনগড়া বিভিন্ন কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য রটাচ্ছে। আমাদের বাসায় এসে বলে গেছেন, টাকা যত লাগে আমি খরচ করবো, তাও তোর মত ছোটলোকের খারাপ চরিত্রের মেয়েকে আমার বাড়ির বৌ করে আনবো না। আমার প্রতি যে অন্যায় করা হয়েছে, আমি তার ন্যায় বিচার চাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার আকুল আবেদন, আমাকে স্বামীর সংসার করার জন্য সহায়তা দান করুন। 

রাকিব ও জুলিয়ার বিয়ের বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ খবর নিতে ভাদ্রা ইউনিয়নের কাজী মো. আবুল বাশারের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, গত ২৪ অক্টোবর রাকিব ও জুলিয়ার বিবাহ তিনি পরিয়েছিলেন। কিন্তু ৩১ অক্টোবর রাকিব-জুলিয়ার বিয়ের রেজিষ্ট্রেশন বাতিল করেন। তবে আবুল বাশার এ বিষয়ে ক্যামেরার সামনে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়ননি। ক্যামেরা বের করা মাত্র তিনি দৌড় দেন।

বিয়ের বিষয়ে রাকিবের বাবা মো. আব্দুল বাছেদ ওরফে বাচ্চু মাষ্টারের বাড়িতে গেলে, তাদের বাড়ি তালাবন্ধ দেখা যায়। পরে, তিনি মুঠোফোনে জানান, চরিত্রহীনা মেয়েকে ছেলের বৌ হিসেবে মেনে নিতে রাজী নন। এছাড়াও বিয়ের সময় রাকিব বিয়ের অনুপযুক্ত ছিল। তাই কাজী রাকিবের বিয়ের রেজিষ্ট্রেশন বাতিল করেন। তবে কথার প্রসঙ্গে তিনি স্বীকার করেন শরিয়ত মোতাবেক রাকিব ও জুলিয়ার বিয়ে এখনো বিদ্যমান। তবে তাদের বিয়ের কোনো বৈধ রেজিষ্ট্রেশন নেই। 

রাকিব-জুলিয়ার বিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত হতে ভাদ্রা ইউনিয়নের স্থানীয় কমপক্ষে ১০ জনকে জিজ্ঞেস করলে, তারা সকলে একবাক্যে বলেন, এটা তো উঁচুনিচু প্রেমের বিয়ে। আমাদের ইউনিয়নে ১০ গ্রামের মানুষ এ বিয়ে সম্পর্কে জানে। এ বিয়ের ঘটনা জানেনা এমন মানুষ এলাকায় খুঁজে পাওয়া যাবে না।

ট্যাগ: