
ঢাকা থেকে জামালপুরগামী একটি কমিউটার ট্রেনে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাত দলের আক্রমণে নিহত হয়েছেন দুই রেলযাত্রী। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত আরও একজন।
বৃহস্পতিবার রাতে জামালপুর-দেওয়ানগঞ্জ কমিউটার ট্রেনে এ ঘটনা ঘটে। ট্রেনটি গাজীপুরের টঙ্গী এলাকা পার হওয়ার পর ডাকাত দলের কবলে পড়ে।
ডাকাতের হামলায় মারা যাওয়া দু’জন যাত্রীর মধ্যে একজন হলেন- জামালপুর শহরের ইকবালপুর এলাকার মো. ওয়াহিদের ছেলে মো. নাহিদ (৪০) এবং মৃত অপরজন অজ্ঞাত (৪০) পরিচয়ের পুরুষ ব্যক্তি। এছাড়া গুরুতর আহত অবস্থায় জামালপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন রুবেল (২২) নামের অপর এক যাত্রী। তিনি জেলার ইসলামপুর উপজেলার মাঝপাড়া গ্রামের হীরু মিয়ার ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শী ট্রেনযাত্রীদের বরাতে রেলওয়ে পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার বিকালে তারা ঢাকা থেকে কমিউটার ট্রেন জামালপুরে যাচ্ছিল। ট্রেনটি ময়মনসিংহের গফরগাঁও রেলস্টেশন ছাড়ার পর ট্রেনের ছাদের যাত্রীদের অনেকেই ডাকাতদলের কবলে পড়েন। ৪/৫ জনের ডাকাতদলটি অনেক যাত্রীর কাছ থেকে মানিব্যাগ ও মোবাইল ফোনসেট লুট করে ট্রেনের ইঞ্জিনের দিকে চলে যায়। এরপর ট্রেনটি রাত আনুমানিক পৌনে ৯টার পর ময়মনসিংহ রেলস্টেশন ছাড়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই যাত্রী ফারুক ও নাহিদসহ বেশ কয়েকজন ট্রেনের ছাদে ডাকাতদের খুঁজতে যান। তারা ডাকাতদের চিনতে পেরে কিছু বলার আগেই ডাকাতরা তাদের ওপর হামলা করে। ডাকাতরা নাহিদ ও অপর একজনকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে। পরে রুবেল মিয়াকেও ছুরিকাঘাত করে মারাত্মক আহত করে। এতে ওই তিন যাত্রী গুরুতর আহত অবস্থায় ট্রেনের ছাদেই পড়ে থাকেন।
রাত ১০টার দিকে ট্রেনটি জামালপুর রেলস্টেশনে পৌঁছলে গুরুতর আহত তিন যাত্রীকে ছাদ থেকে নামিয়ে জামালপুর সদর হাসপাতালে নেয় রেলওয়ে থানা পুলিশ। তাদের মধ্যে নাহিদ ও অজ্ঞাত পরিচয়ের এক ব্যক্তিকে মৃত ঘোষণা করেন হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত মেডিক্যাল অফিসার মো. জাকিউল আলম খান। গুরুতর আহত রুবেল জামালপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
রেল পুলিশের জামালপুর থানার (জিআরপি) এসআই সোহেল রানা বলেন, খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল গিয়ে তিনজনকে উদ্ধার করে জামালপুর সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক দুইজনকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত এক ব্যক্তি চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মৃত দুই ব্যক্তির মরদেহ জামালপুর সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ট্যাগ: জামালপুর
ময়মনসিংহ
অন্তঃসত্ত্বা চাচিকে খুন, ২৭ বছর পর গ্রেপ্তার ভাতিজা

ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার হুরবাড়ি গ্রামে হত্যার প্রায় ২৭ বছর পর যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
রোববার (৩১ জুলাই) দুপুরে র্যাব-১৪’র কার্যালয় থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এর আগে শনিবার (৩০ জুলাই) রাত আড়াইটার দিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার দারুস সালাম থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি উপজেলার হুরবাড়ি এলাকার মৃত মিজান মিয়ার ছেলে সাইফুল ইসলাম (৪৫)।
র্যাব প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, হুরবাড়ি গ্রামের মো. আব্দুল আউয়ালের সঙ্গে মনোয়ারা আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর মনোয়ারাকে যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন করতেন স্বামী। বিয়ের প্রায় দুই বছর পর মনোয়ারা বেগম অন্তঃসত্ত্বা হন। পরে ১৯৯৪ সালের ১১ ডিসেম্বর রাতে যৌতুকের দাবিতে আব্দুল আউয়াল, তার দুই বোন শামছুন্নাহার, হাফেজা খাতুন এবং আউয়ালের ভাতিজা সাইফুল ইসলাম মিলে পিটিয়ে মনোয়ারাকে হত্যা করে। তবে হত্যার ঘটনা ধামাচাপা দিতে মনোয়ারার মুখে বিষ দিয়ে আত্মহত্যা বলে প্রচার করা হয়।
এ বিষয়ে র্যাব-১৪’র কোম্পানি অধিনায়ক মেজর আখের মুহম্মদ জয় বলেন, এ ঘটনার পরে নিহত মনোয়ারার ভাই মো. শহিদুল্লাহ বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে ওই মামলায় ২০০৪ সালের জানুয়ারি মাসে সাইফুলকে যাবজ্জীবন সাজা দেন আদালত। তবে হত্যার পর থেকেই পলাতক ছিলেন সাইফুল।
ময়মনসিংহ
আ.লীগের ২২ নেতাকর্মী বহিষ্কার

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে পৌরসভা নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীর বিপক্ষে অবস্থান এবং দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে জামালপুরে আওয়ামী লীগের ২২ নেতাকর্মীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. বাকী বিল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহম্মেদ চৌধুরীর সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সোমবার (২৫ জুলাই) এ তথ্য জানানো হয়।
বহিষ্কৃতরা হচ্ছেন- দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মনোয়ার হোসেন মনি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আহম্মদ ছাবু, উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিফাইতুল ইসলাম শুভ, ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিজয় মিয়া, আ. গফুর, গোলাম মোস্তফা আবু, আসরাফুল ইসলাম আক্কাস, মো. রেজাউল করিম, মো. ওয়াহাব, দুলাল, বাদশা, বাবলু, তাপস আহম্মদ, মাহাবুবুর রহমান, বিকাশ কবির ইমরান, রেজাউল করিম, মোখলেছুর রহমান, রেজাউল করিম রাজা, শাহারিয়া সোহেল, আলামিন হিটলার, দেওয়ান বাবলা, এবং মোজাফফর আহম্মদ।
আগামী ২৭ জুলাই দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। নির্বাচন মোট ৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগে প্রার্থী ৩ জন, বিএনপির ১ জন। নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইসতিয়াক হোসেন দিদারের স্ত্রী ফারিন হোসেনকে। আর দলীয় মনোয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) প্রার্থী হয়েছে স্থানীয় সংসদ সদস্য সাবেক মন্ত্রী আবুল কালাম আজাদের ভাতিজা নূরনবী অপু এবং বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে থাপ্পড় মেরে চেয়ার হারানো শাহ নেওয়াজ শাহানশাহ।
আর বিএনপির একমাত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে লড়াই করছেন সাদেক আকতার নেওয়াজী। দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচনে এই প্রথম ভোটারা ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট প্রদান করবেন।
ময়মনসিংহ
চোর সন্দেহে তিন যুবককে গাছে বেঁধে নির্যাতন, গ্রেপ্তার ৩

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় চোর সন্দেহে তিন যুবককে বাড়ি থেকে ধরে এনে গাছে বেঁধে সাত ঘণ্টা নির্যাতনের দায়ে অভিযুক্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় তাদের আটক করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন, এনায়েতপুর ইউপি সদস্য তারা মিয়া, কথিত অটোর মালিক সাইদুল ও নির্যাতনকারী শামীম।
ফুলবাড়িয়া থানার ওসি জাকির হোসেন মোল্লা আজ রাতে এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
রবিবার রাতে উপজেলার এনায়েতপুর ইউনিযনের মাঝিরঘাট বাজার থেকে সাইদুল নামে এক ব্যক্তির একটি অটো চুরি হয়। সেই অটো চুরির সন্দেহে সোমবার সকাল ১০টার দিকে মেম্বার তারা মিয়া ও তার লোকজন জুলহাস (২৪), বাবু (২২) ও রিপন (২৫) নামে তিন যুবককে বাড়ি থেকে ধরে এনে মাঝিরঘাট বাজারে আমগাছে বেঁধে সাত ঘণ্টা নির্যাতন করেন। নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত ইউপি সদস্যসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান ওসি।
ময়মনসিংহ
সময়ের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে খেজুর রস

ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে শীতের সকালে গ্রামে-গ্রামে এমন কি ছোট-বড় বাজারগুলোতে গাছিরা মাটির কলসি ভারে করে খেজুরের রস বিক্রি করতো। সময়ের বিবর্তনে সে চিত্র পাল্টে আজ তা হারিয়ে যেতে বসেছে। এক সময় গ্রামে-গঞ্জের রাস্তাগুলোতে অনেক খেজুর গাছ দেখা গেলেও বর্তমানে উপজেলার প্রায় রাস্তাগুলো খেজুর গাছশূন্য। ফলে হারিয়ে যেতে বসেছে বাংলার ঐতিহ্য সু-স্বাদু খেজুর রস।
শীতকালে খেজুর রসের তৈরি নানা প্রকার পিঠা-পায়েস ছিল হালুয়াঘাটের মানুষের নবান্নের সেরা উপহার। খেজুর রস থেকে তৈরি খেজুরের গুড় দিয়ে ভাপা পিঠা খাওয়ার মজা-ই ছিলো অন্যরকম। এখন খেজুর রস না পাওয়ায় সেই চিরন্তন আনন্দ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন মানুষ। শীতকালে খেজুরের রস থেকে তৈরি ঝুলা গুর ও পাটি খেজুরের গুর পাওয়া গেলেও তা স্বাদে-গন্ধে আর আগের মতো নয়। এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ীরা এতে বিভিন্ন উপকরণের মিশ্রণে এটি যে কত নম্বর করে ফেলেছে তা আর পরখ করার উপায় নেই।
জুগলী ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের গাছি করিম মিয়া বলেন, "গ্রামে এখন খেজুর গাছ নেই বললেই চলে। পুরো গ্রামে যে কয়েকটি গাছ আছে, পরিচর্যার অভাবে সেগুলোতেও ভালো রস আরহণ করতে পারছি না।"
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হালুয়াঘাট উপজেলা কৃষি অফিসার মো. মাসুদুর রহমান বলেন, খেজুরের রস ও গুড়ের চাহিদা থাকলেও দিনকে দিন খেজুর গাছ কমে যাচ্ছে। সরকারী পৃষ্ঠ পোষকতায় যেভাবে তাল গাছ লাগানো হচ্ছে আশা করি সেভাবেই যদি খেজুর গাছ লাগানো হতো তাহলে ভোক্তার চাহিদা পরিপূর্ণ হতো বলে আমি মনে করি।
ময়মনসিংহ
গফরগাঁওয়ে মুখে বিষ ঢেলে গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ

ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে এক গৃহবধূকে যৌতুকের জন্য মারধর করে মুখে বিষ ঢেলে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার পর থেকে নিহত গৃহবধূর স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন পলাতক রয়েছেন।
নিহত গৃহবধূর নাম দিলরুবা খাতুন (৩০)। তিনি উপজেলার সালটিয়া ইউনিয়নের রৌহা গ্রামের সিরাজ উদ্দিনের মেয়ে।
জানা যায়, গত দশ মাস আগে উপজেলার রাওনা ইউনিয়নের খারুয়া বড়াইল গ্রামের মোনায়েম মাস্টারের ছেলে মনিরুজ্জামান খাঁন মানিকের সঙ্গে পারিবারিকভাবে দিলরুবার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবিতে দিলরুবার ওপর নির্যাতন করে আসছিল তার স্বামী মানিক। বিয়ের কিছুদিন পর দিলরুবা তার বাবার কাছ থেকে এক লাখ এনে দিলেও স্বামী মানিক আরও দুই লাখ টাকা দাবি করে আসছিল।
নিহত দিলরুবার পরিবারের দাবি, গত ৩০ জুন (বুধবার) মানিক যৌতুকের জন্য স্ত্রীর মুখে বিষ ঢেলে হত্যার চেষ্টা করে। পরে শ্বশুরবাড়ির লোকজন মুমুর্ষূ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার রাতে দিলরুবা মারা যান।
গফরগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অনুকূল সরকার জানান, এ ঘটনায় ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।